টেট পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জের ইনা সিংহ। ১০ই ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ফল প্রকাশ হয়েছে ২০২২ সালের টেট পরীক্ষার। মোট ১৫০ নম্বরের মধ্যে ১৩৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার হয়েছেন ইনা সিংহ।
এই ফল তিনি আশা করেননি এমনটা জানিয়েছেন একটি সর্ব ভারতিয় সংবাদ মাধ্যমকে। তাঁর মতে, টেট নিয়ে লাগাতার আন্দোলনের জেরে স্বচ্ছ পরীক্ষা এবং খুবই দ্রুত ফল প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন- “পরীক্ষা ভাল হয়েছিল। তবে এই ফল হবে ভাবিনি।”
বাড়িতে টিনের ছাউনি দেওয়া। তার সামনে ভিড় জমেছে লোকজনের। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের হুড়োহুড়ি পরেছে। পরীক্ষা দেওয়ার পর তিনি কত নম্বর আশা করেছিলেন? জবাবে ইনা জানিয়েছেন- “আশা ছিল ১২৮ নম্বর পাব।” তবে ফল বেরোনোর পর দেখা গিয়েছে যে নিজের প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গিয়েছেন বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জের ইনা সিংহ। রাজ্য জুড়ে টেট নিয়ে যে টানাপড়েন আর বিতর্ক চলছে, তা ইনার প্রস্তুতিতে খুব একটা ছাপ ফেলতে পারেনি। তিনি নিজের লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। সাফল্য যে এক দিন আসবেই সে বিশ্বাস তাঁর ছিল এমনটা জানিয়েছেন ইনা। ইনা সিংহ এর কথায়- “দীর্ঘ দিন ধরে চাকরি নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। আর সেই আন্দোলনের কারণেই স্বচ্ছতা এসেছে পরীক্ষায়। আন্দোলনকারীদের লাগাতার লড়াইয়েরই সাফল্য এই পরীক্ষা।”
ইনা দাবি জানিয়েছেন- তিনি চাকরির বিষয়ে আশাবাদী। অত সহজে হাল ছাড়ার পাত্রীও নন ইনা। তাঁর কথায়, “এখনও গন্তব্যে পৌঁছতে পারিনি। তবে, ওই যে কথায় আছে, আশায় বাঁচে চাষা। সুতরাং হাল ছাড়লে চলবে না।”
বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জের পুলিশ ফাঁড়ির কাছেই ইনাদের বাড়ি। তাদের বাড়ি টিনের ছাউনি। আর ইনার বাবা দেবাশিস সিংহ অসুস্থ অবস্থায় আছেন। ফলে তিনি কোনও কাজ করতে পারেন না। তাঁর মা কাকলি সিংহ গৃহবধূ। তাঁদের বাড়ির সামনে রাস্তা, সেই রাস্তার উপর তিনটি দোকান ঘর ভাড়া দেওয়া রয়েছে। তাদের সংসার চলে ওই ভাড়ার টাকা দিয়েই কোনও রকমে এমনটা জানিয়েছেন ইনার মা। তিনি আরও বলেছেন বলেন- “প্রথম থেকেই পড়াশোনায় বেশ ভাল ইনা। আর টেট পরীক্ষার সময় ইনা রাত-দিন এক করে পড়াশোনা করত। পড়াশোনাই ওর একমাত্র ধ্যান জ্ঞান।”
হরিসভা হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে মাধ্যমিক পাশ করেছেন ইনা। আর ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমি উর্ত্তীণ হয়েছেন ইনা। ইনা সিংহ ২০১৪ সালে ইংরেজি অর্নাস নিয়ে ভূপেন্দ্রনাথ স্মৃতি মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেছেন।