শাস্ত্র মতে এতদিন দেখা গিয়েছে ছেলের পৈতে হয়। এবার দেখা গেলো মেয়েদেরও পৈতে দেওয়ার রীতি। এমনই এক দৃষ্টান্ত সম্প্রতি ধরা পড়েছে। জানা যাচ্ছে, এক দম্পতি বৈদিক যুগে মেয়েদের ‘দ্বিজা’ হওয়ার রেওয়াজ ফেরাতে আয়োজন করলেন মেয়ের পৈতে। ওই দম্পতি বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা। তারা হলেন বসন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কৌশানী বন্দ্যোপাধ্যায়।
একবিংশ শতাব্দীতে এসে মেয়ের পৈতে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তারা। মেয়ের পৈতের নিমন্ত্রণ পত্রে উল্লেখ করে দিলেন কেনো মেয়েদের পৈতে প্রয়োজন। যেখানে স্থান ও কালের উল্লেখ ও সনির্বন্ধ আমন্ত্রণের সঙ্গে রয়েছে পাতাজোড়া ব্যাখ্যা কেন মেয়েদেরও উপনয়ন সম্ভব। গত বুধবার সিউড়ির রামকৃষ্ণপল্লির বাড়িতে মেয়ের উপনয়নের আয়োজন করেছেন বসন্ত ও কৌশানী।
দেখা গিয়েছে হলুদ রঙের শাড়ি পরে বাবার কোলে বসে রয়েছে কৈরভী। সঙ্গে গায়ে রয়েছে নানান রঙের গয়না। এর আগে তুতো দাদাদের উপনয়ন দেখলেও আজ তার নিজের উপনয়ন। কৈরভীর কথায়, “মা বলেছে আজ আমার দ্বিতীয় জন্ম হল”। যদিও মেয়ের এই উপনয়নের ব্যবস্থা হঠাৎ করে করেননি বসন্ত ও কৌশানী। অনেক আগে থেকেই তা ঠিক করা ছিল। কৌশানীর কথায়, বাবা মায়ের কাছে ছেলেমেয়ে উভয়ই সমান তাই মেয়ের পৈতে দিচ্ছেন তিনি।
কৌশানী জানান, মেয়ের পৈতের নিমন্ত্রণ করতে গিয়ে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাদের। কিন্তু সকলকে তারা বুঝিয়েছেন আসল কারণ। কর্মসূত্রে বসন্ত বন্দ্যেপাধ্যায় কলকাতার এনআরএস হাসপাতাল থেকে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে শল্য চিকিৎসক পদে বদলি হয়েছেন। এর পাশাপাশি তার স্ত্রী একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি যাদবপুরে থাকেন। কৈরভী পড়াশোনা করে সিবিএসই অনুমোদিত স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে।
দম্পতির কথায় এর আগে কৈরভীর অন্নপ্রাশনে যজ্ঞ করতে রাজি ছিলেন না পুরোহিত। তিনি জানিয়েছিলেন, পুত্র সন্তানের অন্নপ্রাশন ও মেয়ের বিয়ের সময় যজ্ঞ করা যায়। সেইসময় তার শ্বশুর মশাই বাঁশরীমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্জিকা ঘেঁটে দেখিয়েছিলেন মেয়ের অন্নপ্রাশনে কোনো বাঁধা নেই। সেইসময় তারা ঠিক করেন মেয়ের পৈতেও দেবেন তারা।