চালু করার চেষ্টা করা হয়েছিল বিমানের ইঞ্জিন, তারপরও কীভাবে ঘটল আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা? ঘটনার এক মাস পর প্রকাশ্যে এলো তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট

গত ১২ই জুন আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার AI171 বিমানটি ভেঙে পড়ে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে স্বল্প দূরে একটি মেডিকেল কলেজের হস্টেলের উপর। সেই ঘটনার আজ এক মাস। কীভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটল? তারই একটি প্রাথমিক রিপোর্ট তদন্তের মাধ্যমে প্রকাশ পেলো। বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জন যাত্রী বিমান দুর্ঘটনায় মারা যায়। যে মেডিকেল কলেজ হস্টেলের উপর বিমানটি ভেঙে পড়েছিল সেই হস্টেলে থাকা আরও ১৯ জন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়।

ওই ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর যে রিপোর্ট উঠে এলো তা জানার পর ভয়ে গা শিউরে উঠতে বাধ্য। প্রাথমিক ওই তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করল এয়ারক্রাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো। ১৫ পাতার ওই রিপোর্টে সরকারিভাবে প্রথমবার জানানো হল, দুর্ঘটনার ওই মুহূর্তে ওইদিন বিমানের মধ্যে ঠিক কী হয়েছিল। কী কারণে ভেঙে পড়ে ওই বিমান। জানা যাচ্ছে, দুই পাইলটের মধ্যে জ্বালানি নিয়ে কথা হয়েছিল।

বিামনটি যে জায়গায় ভেঙে পড়ে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় দু’টি ব্ল্যাকবক্স। সেই ব্ল্যাকবক্সই জানাল ঘটনার মূহুর্তে ঠিক কী হয়েছিল। ওই ব্ল্যাকবক্সে থাকা কথপোকথন থেকে জানা যায়, বিমান উড়তে শুরু করার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বিমানের দু’টি ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যায়। জানা যাচ্ছে, রানওয়ে থেকে টেক অফের পরেই বিমানের ইঞ্জিন-১ ও ইঞ্জিন-২ বন্ধ হয়ে যায়। ইঞ্জিনে জ্বালানি পৌঁছোতে পারছিল না বলে জানা যাচ্ছে ওই রিপোর্ট থেকে।

জ্বালানির সুইচ ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’-এ চলে আসে। সেইসময় এক পাইলট অপর পাইলটকে জিগ্যেস করেন, “তুমি জ্বালানি বন্ধ করে দিলে কেনো?” অপরজন জানায়, “আমি কিছু বন্ধ করিনি।” জ্বালানি বন্ধ হওয়ার পর বিমানে থাকা দ্বিতীয় ইঞ্জিনটিও বন্ধ হয়ে যায়। ফের দ্বিতীয় ইঞ্জিনটি চলতে শুরু করলেও ধীরে ধীরে বিমানের গতি কমতে শুরু করে। ওই ইঞ্জিনে জ্বালানি পুনরায় সরবরাহ করা হলেও ইঞ্জিনকে আর সচল করা যায়নি।

ওই ব্ল্যাকবক্সে ইঞ্জিন যে ফের চালু করার চেষ্টা করা হয়েছিল তার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ফুয়েল সুইচ ফের ‘রান’ অবস্থায় আনা হলেও ‘ইজিটি’ বেড়ে যায়। এরফলে বোঝা যায় যে পুনরায় ইঞ্জিন চালু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। বারংবার ইঞ্জিন চালু করার চেষ্টা করা হলেও পাইলটরা ব্যর্থ হন। ২ নম্বর ইঞ্জিনটি চালু হলেও প্রথম ইঞ্জিনকে আর সচল করা যায়নি। আর এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বিমানটি দুর্ঘটনার শিকার হয়।

error: Content is protected !!