পুজোর প্রসাদে মুরগির ডিম দিলে সুস্থ হবে সন্তান! এমনই বিধি রয়েছে যোগীরাজ্যে

মা কালীর নৈবিদ্যে হাঁসের ডিম দেওয়ার বিধি অনেক জায়গাতেই আছে। তন্ত্রমন্ত্রের দেবী পূজা করলে, হাঁসের ডিম নৈবিদ্য হিসেবে দেওয়া হয়। কিন্তু নৈবেদ্য বা উমারতে মুরগির ডিম দেওয়ার কথা শোনা যায়নি। যোগীরাজ্যের এই মন্দির অন্যত্র।

যোগীরাজ্যের মন্দিরে দেবতাকে মুরগির ডিম দিয়ে পূজা করার নিয়ম রয়েছে। অনেক দূর দূর থেকে ভক্তরা হাজির হয় এই মন্দিরে মুরগির ডিম নিয়ে।
যোগী রাজ্যের ফিরোজাবাদ জেলা। ওখানকার বিলহেনে গ্রামের জাগ্রত মন্দিরের রয়েছে এমন রীতি। স্থানীয় আদিবাসীদের কাছে এটা একটি বাবা নগর সেনের মন্দির হিসাবে জানা। প্রতিদিন শয়ে শয়ে অনুগামীরা মন্দিরে ভিড় জমান। সবার হাতেই থাকে কাঁচা ডিম। ডিম দিয়েই পুজো দেওয়ার রীতি রয়েছে। নৈবিদ্য হিসেবে মেলায় বিক্রি হচ্ছে লুচি, হালুয়া, এবং ডিম। ভরসা এই নৈবিদ্য খাওয়ালে অসুস্থ মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে বাড়ির যদি ছোট বাচ্চারা এই প্রসাদ খায় তাহলে ম্যাজিকের মত কাজ হয় নাকি।

তাই অনেক লোক দলে দলে সন্তানের শুভকামনায় মন্দিরে ভিড় করেন অনুগামীরা। বাবা নাগর ছিলেন স্থানীয় উপজাতির প্রধান উপাস্য। তবে আজকাল সাধারণত সবাই তার অনুগামী হিসেবে মন্দিরা আসেন। পুজো করেন নির্দিষ্ট রীতি মেনেই। অনেক অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে বাবার দরজায় আসেন। ফিরে যান সুস্থ সন্তানকে নিয়ে। সারা বছর এই নীতিতেই পূজো হয়। তবে বৈশাখ মাসে এই মন্দিরে অনেক বড় একটি মেলা বসে। রীতিমতো সেখানে অনেক ভিড় হয়।
তবে আনন্দের বিষয় হল এই মেলার সময় ডিম ঢিল মারার এক অদ্ভুত নিয়ম রয়েছে। অনুগামীরা দেবতার দিকেই ডিম ছুড়ে মারেন। এই রীতি কেন কেউই ঠিক মতো বলতে পারেনা।

আসলে, “বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।” এই মন্দিরের রীতির সাথে এই প্রবাতটি বলা যেতে পারে। নৈবিদ্য যা খুশি হতে পারে, কিন্তু তাকে অসুস্থ মানুষ সুস্থ হয়ে যাচ্ছে, এমন ঘটনা অবাক করারই কথা। কেউ কেউ বলেন ডিমের মধ্যে থাকা প্রোটিনের জন্য এমন হয়। কিন্তু তাই বলে সব অসুখ সারানো অসম্ভব? প্রশ্ন হতেই পারে।

আর এখানেই কথা বলে শ্রদ্ধা। নৈবিদ্য কতটা কাজের তা নিয়ে তর্ক থাকলেও শ্রদ্ধা ও ভরসার কোনো দ্বিধা নেই। আর সেই ভরসায় ভর করেই এখানে উপস্থিত হয় অনুগামীরা। এক রকম আমিষ নিরামিষ বিভেদ ভুলে, চিরাচরিত রীতিতে ডিম দিয়ে পুজো দেয় আরাধনীর।

আরও পড়ুন,
*‘দুর্গতিনাশিনী’, RG Kar কাণ্ডের প্রতিবাদে গায়ে কাঁটা দেওয়া গান সংগীত শিল্পী শানের