পশ্চিমবঙ্গের বুকে একাধিক বাড়িতে বহু বছর ধরে প্রচলিত রয়েছে কালী পুজো। তেমনই বেশ কিছু জাগ্রত ও জনপ্রিয় কালী বাড়ি রয়েছে যেখানে শতকের পর শতক ধরে কালী পুজো হয়ে আসছে। তেমনই একটি বাড়ি হলো শতবর্ষ প্রাচীন মালদার রতুয়ার গোবরজনা কালী বাড়ি৷ এই বাড়িতে আগমন ঘটে সিদ্ধায়ু ভৈরবের৷ তার দর্শন পেতেই লক্ষাধিক ভক্তরা ছুটে যান সেই কালী বাড়িতে।
কার্তিক মাসের অমাবস্যার রাতে পুজোর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ ঘন্টা ধরে এক নাগাড়ে পাঁঠা বলি চলে। জানা যাচ্ছে, মন্দির থেকে ৩০০ মিটার দূরে থাকা কালিন্দী নদীতে যতক্ষণ না রক্ত মিশে যাচ্ছে ততক্ষণ বলি থামে না। তবে শুধু পাঁঠা বলি নয়, এর সঙ্গে চলে চালকুমড়ো ও পায়রা বলিও। এই মন্দিরের পুজো ৪০০ বছরের পুরনো। এখনও ভক্তের দল এই মন্দিরে ছুটে আসেন।
শোনা যায়, একসময় বাছুর, মহিষ বলি দেওয়ার প্রচলন ছিল। তবে এখন আর সেসব বলি দেওয়া হয় না৷ এই মন্দিরের কালী ঠাকুর বেশ জাগ্রত বলেই মনে করেন ভক্তরা। মালদার চাঁচোল মহাকুমার রতুয়া ২ ব্লকের আড়াইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো গোবরজনা কালী মন্দিরের পুজো। শোনা যায়, এই মন্দিরের দেবীর মাথা ও শরীর থেকে পুজোর রাতে অলৌকিক ছটা বেরিয়ে আসে।
মা কখনও নাকি হাসেন আবার কখনও চোখ থেকে জল গড়ায়৷ এমন অনেক অলৌকিক কাহিনি ছড়িয়ে রয়েছে সকলের মুখে। মন ভরে দেবী কালীর কাছে যারা মানত করেছেন তারা কেউ খালি হাতে ফিরে যাননি বলে শোনা যায়৷ এই মন্দিরের পাশে রয়েছে শ্মশান। সেখানে অনেকেই কালী পুজোর রাতে সিদ্ধ পুরুষের দর্শন পেয়েছে বলে শোনা যায়।
কালী পুজোর দিন মন্দিরে ভক্তদের বিপুল আনাগোনা হয়। মনের ইচ্ছে পূরণ করতে ভক্তরা এই কালী বাড়ির পুজোতে ছুটে আসেন। মনের ইচ্ছে পূরণ হলে পাঁঠা, কুমড়ো, পায়রা বলি দেওয়া হয়। এই বাড়ির পুজো করে আসছে চৌধুরী পরিবার। পুরোনো রীতি মেনে মাকে কাঁধে করে নিয়ে আসা হয়৷ এরপর পুজোপাঠের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় পাঁঠা বলি।