RG Kar Case: আর জি কর মেডিকেল হাসপাতালের মৃত তরুণী চিকিৎসকের আগামী বছর বিয়ের কথা ছিল। আর সেই বিয়ের তারিখ পাকা হয়ে গিয়েছিল। স্কুল জীবন থেকেই নির্যাতিতার প্রেমের কাহিনির সূত্রপাত। তার প্রেমিক একজন ডাক্তার। স্বপ্ন ছিল দু’জনেই ডাক্তার হবেন এবং বিয়ে করে সুখে ঘর বাঁধবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন যেনো স্বপ্ন হয়ে রইল। নৃশংসভাবে মৃত্যু হলো ওই তরুণীর। হাসপাতালের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর গোটা রাজ্য তোলপাড় হয়ে গিয়েছে।
প্রেমিকার মৃত্যুতে দিশেহারা প্রেমিক। এখনও ফোনের কলার টিউনে বাজছে, “আমাদের গল্পগুলো অল্প সময় ঘর পাতালো”। এটিই প্রয়াত তরুণীর সবচেয়ে প্রিয় গান ছিল। তাই সেটি তিনি নিজের কলার টিউন হিসেবে রাখেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন ওই তরুণীর প্রেমিক। আর সেই খবর ছাপা হয় সংবাদপত্রে। খবরটি এদিন চোখে পড়ে গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তীর বাবার।
বাবার হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজে সবটা জানতে পারেন লগ্নজিতা। এরপর তার দু-চোখ বেয়ে জল। তার কথায়, এতদিন অনেকেই তাকে গানের জন্য প্রশংসা করেছেন। কিন্তু তা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাননি তিনি। কিন্তু সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনায় ওই তরুণীর জীবনে যে তার গান এভাবে ছুঁয়ে গেছে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি লগ্নজিতা। এই ঘটনায় একদিকে যেমন তাকে প্রভাবিত করেছে তেমনই আফসোসে হাত কামড়াচ্ছেন তিনি।
তার কথায়, “একবার যদি ওঁকে গানটা সামনাসামনি শোনাতে পারতাম।” তিনি বলেন, “‘সব মেয়েদের কাছেই তাদের বাবারা হিরো, আমি এই ক্ষেত্রে কোনো ব্যতিক্রম নই; কিন্তু আজ আমার বাবা আবার নতুন করে আমার হিরো হয়ে উঠলেন। আজ আমি ঘুম থেকে ওঠার আগেই আমার বাবা আমায় এই খবরের স্ক্রিনশট টি পাঠান, এবং আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন বাবা সেখানে কী লিখেছেন। আমি গর্বিত যে আমার বাবা চান যে আমি প্রতিবাদ করি, পথে নামি।”
লগ্নজিতা বলেন, “আমি কখনো ভাবিনি আমার এই গানটি মেয়েটির জীবনের সঙ্গে এত নিবিড় ভাবে জড়িয়ে থাকতে পারে। এখন যখন জানতে পেরেছি, তখন যেন কেমন একটা আলাদা রকম যন্ত্রণা হচ্ছে বুকের মধ্যে। আগে যে কষ্ট হচ্ছিল সেটা হয় তো সর্বজনীন, কিন্তু আজ সকাল থেকে সেই কষ্টের ধরণটা একটু বদলে গেল।”
আগামীতে যখন এই গানটি তিনি কনসার্টে গাইবেন গখন ওই তরুণীর কথা নিশ্চয়ই বলবেন তিনি। গায়িকা বলেন, “আজ আমার কাছে দেশের লড়াই, আর মনের লড়াই মিলেমিশে এক হয়ে গেল। মনের মধ্যেকার দেশটা জুড়ে গানটা ফিরে ফিরে আসছে। আর শুনতে পাচ্ছি আমার বাবার কণ্ঠ, ‘রাই মা, তোমার গানের লাইন। প্রতিবাদ করো, পথে নামো।”