RG Kar: ষষ্ঠী থেকে বাড়ির সম্মুখে ধরনায় বসবেন তিলোত্তমার পিতা-মাতা, সাথে থাকবে আত্মীয়-স্বজনরা

দুর্গাপূজার চারদিন এত বছর ধুমধাম করে কাটতো। গৃহের পূজা বলে কথা! সকাল থেকে লোকজনের আগমন। পুরো বাড়ি আলো সজ্জিত হতো। এই বছর আর ওই গৃহে আলো জ্বলবে না। ঢাকের শব্দও পাওয়া যাবে না। ৯ আগস্ট আরজিকর হাসপাতালের কর্মকাণ্ডে পর সবকিছু পাল্টে গেছে। এই বছর গৃহে নয় তাদের বাড়ির সামনে তৈরি হচ্ছে স্টেজ। ষষ্ঠী থেকে চার দিন ওইখানেই ধর্নায় বসবেন আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের মাতা পিতা। তাদের পাশে থাকবেন আত্মীয়-স্বজনরা। তিলোত্তমার পিতা-মাতা জানিয়েছেন, ইচ্ছা করলে যে কেউ আসতে পারেন এই প্রতিবাদ মিছিলে। তবে স্টেজে থাকবে শুধুমাত্র আত্মীয়স্বজনরা।

তিলোত্তমার মাতা জানিয়েছেন, “তিনি মেয়ের আবদারের জন্য বাড়িতে দুর্গাপূজা আরম্ভ করেছিলেন। গৃহের গ্যারেজে রাখা হয়েছিল মূর্তি। ওই সময় বাড়িটা আলোয় ঝলমল করতো। মেলা বসে যেত সকাল থেকেই। এই বছর আত্মীয়-স্বজনদের সাথে একটু আলাদাভাবে পুজো উদযাপন করতে চাইছে তিলোত্তমার পিতা মাতা। তার পিতার কথায়, গৃহের চতুর্দিকে পুজো হতো। খুব আনন্দ হতো। এই বছর খুব দুঃখে রয়েছি। তাই গৃহের সম্মুখে ধরনা মঞ্চ করেছি। ষষ্ঠী থেকে শুরু করি চার দিন ওখানেই বসব। পাশে থাকবে আত্মীয়-স্বজনরা। যাদের আসতে ইচ্ছে করবে তারা আসতে পারেন।” তিলোত্তমার পিতা বলেছেন। সেখানে রাজনীতিবিদরাও ইচ্ছে করলে আসতে পারেন। তবে স্টেজে তাদের জায়গা হবে না। তিলোত্তমার মাতা বলেছেন, “রাজনীতির রং আমরা চাই না”।

আরজিকরের তিলোত্তমার বিচার এবং সরকারি হাসপাতালে সুরক্ষা সহ বহু দাবিতে ধর্মতলায় আমরণ অনশন আরম্ভ করেছেন ৬ জন জুনিয়র চিকিৎসক। তিলোত্তমার মা জানিয়েছেন, “তার কন্যার বিচারের দাবিতে যারা প্রতিবাদ করছেন, তারা সবাই এখন তার সন্তান। ওদের কথা ভেবে তিনি এখন দুঃখ পাচ্ছেন। তার কথায়,”কন্যাকে হারিয়েছি। জুনিয়র চিকিৎসকরা যে প্রতিবাদ করছে, তা দেখে ঘরে বসে আমার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে। ওরা না খেয়ে আছে। আমি তো এখনো ওদের মাতা।

ওরা আমার সন্তান।” তারপরে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে ওদের সমস্যা সমাধান করার জন্য অনুরোধ করব।” তিলোত্তমার পিতা রাজ্য সরকারের ‘মানবিকতা’ নিয়ে জিজ্ঞাসা করছে। তার কথায়, ‘সরকারের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই বিষয়ে সরকার কোন কথা বলেনি প্রতিবাদীদের সাথে। উল্টে কোনো সহযোগিতাই করেনি। অনশনকারীরা দরখাস্ত করলেও তাদের জন্য বায়ো শৌচালয়ের ব্যবস্থা করেনি। ‘মানবিক’হচ্ছে না কেন সরকারের?’ তার দাবি, সরকারের ‘মানবিক ভাবে চিন্তা ধারা’ না করলেই এই কর্মকাণ্ড বন্ধ হবে না। এই আলোচনায় তিনি জয়নগর, পটাশপুর-এর মত ঘটনাগুলি কি করে থামবে? থামবার কোন লক্ষণই দেখছি না।

“আলোচনায় জয়নগরের নয় বছরের শিশুকে বলাৎকার করে এবং মারার অভিযোগ উঠেছে। পটাশপুর বউকে বলাৎকার করে মারার অভিযোগ উঠেছে। এই দুটি ঘটনার জন্য তারা কষ্ট পেয়েছে বলে জানিয়েছে তিলোত্তমার পিতা মাতা। তিলোত্তমার মা বলেছেন, মা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, হাসপাতালের ভেতরে কি করে আমার মেয়ের সাথে এইরকম কাজ ঘটেছিল? প্রমাণ লুট করাও কি দুর্ঘটনা?” তাদের প্রশ্ন হাসপাতালের ভেতরে এরকম ঘটনা ঘটলো তাহলে নিরাপত্তা কোথায় আছে?