২০২৫–২৬ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার চমকপ্রদভাবে ৮.২ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। গত ছয় ত্রৈমাসিকের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ বৃদ্ধি, যা স্পষ্টই জানিয়ে দেয় যে ভারতীয় অর্থনীতি বর্তমানে এক শক্তিশালী পুনরুত্থানের পর্যায়ে রয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে দেশের আর্থিক কার্যকলাপ নতুন গতি পায়, যার প্রধান ভিত্তি উৎপাদন, নির্মাণ ও পরিষেবা খাতের উল্লেখযোগ্য উন্নতি।
গত অর্থবর্ষের একই সময়ে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি ছিল মাত্র ৫.৬ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধি টপকে যায় প্রায় তিন শতাংশ পয়েন্ট। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধি ছিল ৭.৮ শতাংশ—দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে তা ছাড়িয়ে আরও উচ্চতায় পৌঁছেছে।
জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের (NSO) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভারতের আসল জিডিপি বেড়ে হয়েছে ৪৮.৬৩ লক্ষ কোটি টাকা, যা গত বছরের ৪৪.৯৪ লক্ষ কোটি টাকার তুলনায় প্রায় ৪ লক্ষ কোটি বেশি। নমিন্যাল জিডিপিও ৮.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫.২৫ লক্ষ কোটি টাকায়।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে ভারতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা বাস্তবে ঘটেনি। উল্টে দেখা যাচ্ছে, শুল্ক চাপানো সত্ত্বেও ভারতীয় অর্থনীতি স্থিতিশীল থেকেছে এবং প্রবৃদ্ধি আরও শক্তিশালী হয়েছে।
জিডিপির এই ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এ তিনি লিখেছেন, “এই প্রবৃদ্ধি আমাদের উন্নয়নমুখী নীতি ও ধারাবাহিক সংস্কারের ফলাফল। এটি দেশের মানুষের কঠোর পরিশ্রমের প্রতিফলন।” তিনি আরও জানান, সরকার নাগরিকদের জীবনকে সহজ করতে এবং অর্থনীতির ভিত্তিকে আরও মজবুত করতে সংস্কার অব্যাহত রাখবে।
সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের অনিশ্চিত অর্থনৈতিক পরিবেশেও ভারত তার প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখতে পেরেছে। উৎপাদনশীল খাতের পুনরুত্থান, অবকাঠামো নির্মাণে জোর এবং পরিষেবা খাতের সম্প্রসারণ মিলেই ভারতের অর্থনীতিকে এই নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।