গত ৮ই আগস্ট কলকাতার বুকে এক প্রথম সারির সরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। এই ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই ঘটনা কেনো ঘটল এবং কারা ঘটালো সেই উত্তর এখনও অজানা। তাই ওই তরুণী চিকিৎসকের বিচার ছিনিয়ে আনার জন্য চাই আরও জোড়ালো কন্ঠ। আর জি কর মামলায় তাই এবার বদল করা হলো আইনজীবীর। সুপ্রিম কোর্টে এবার মৃত তরুণী চিকিৎসকের পরিবারের হয়ে মামলা লড়বেন বিশিষ্ট আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার।
এই মামলা লড়ছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য্য। হঠাৎ করে তাকে বদলে বৃন্দা গ্রোভারকে বেছে নিয়েছে মৃতার পরিবার। সুপ্রিম কোর্টে মৃত তরুণী চিকিৎসকের পরিবারের হয়ে মামলা লড়ার জন্য এক টাকাও নেবেন না আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। তিনি তার পেশাদার জীবনে নারী ও শিশু সুরক্ষার উপর একাধিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা লড়েছেন। তাই নির্যাতিতার পরিবারের তরফে তাকে অনুরোধ করা হলে তা তিনি ফিরিয়ে দিতে পারেননি।
বৃন্দা গ্রোভার তার পেশাদার জীবনে একাধিক উল্লেখযোগ্য মামলায় লড়াই করেছেন। তার মধ্যে একটি মামলা হলো বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলা। গুজরাট সরকারের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান বিলকিস বানো। তার হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়েন বৃন্দা গ্রোভার। এরফলে চরম কটাক্ষের মুখে পড়তে গুজরাট সরকারকে তার পূর্ববর্তী কাজের জন্য। এছাড়া আরও একাধিক নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় লড়েছেন বৃন্দা।
১৯৮৭ সালে হাসিমপুরা পুলিশ হত্যা মামলা, ২০০৪ সালে ইসরাত জাহান মামলা, ২০০৮ সালে কান্দামালে খ্রিস্টান বিরোধী দাঙ্গা মামলা একাধিক মামলা লড়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। এর পাশাপাশি আইন তৈরি ও সংশোধনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। ২০১৩ সালে টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের মধ্যে একজন ছিলেন বৃন্দা গ্রোভার।
বৃন্দা গ্রোভার প্রথমে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট স্টেফেনস কলেজ থেকে আইন ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ও ১৯৮৯ সালে দেশে ফিরে এসে ট্রায়াল কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন। এরপর সেখান থেকে হাইকোর্ট এবং পরবর্তী কালে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তবে শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও আইনজীবী হিসেবে বিশেষ খ্যাতি রয়েছে বৃন্দা গ্রোভারের।