হলুদের ওপর কালো ডোরাকাটা দাগ! যা মনে করিয়ে দেয় ভারতের জাতীয় পশু বাঘের কথা। তবে সেই রং ধীরে ধীরে কৃষ্ণ বর্ণ ধারণ করছে। ফলস্বরূপ চিন্তার ভাঁজ বাঘ বিশেষজ্ঞদের কপালে। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার সিমলিপালে।
বাঘের সংখ্যা বাড়লেও তাদের আদি রঙের পরিবর্তন মোটেই স্বস্তি দিচ্ছে না বনকর্তাদের। এই বিষয়ে বাঘ সংরক্ষণে দেশের সর্বোচ্চ সংস্থা ‘ন্যাশনাল টাইগার কনজ়ারভেশন অথরিটি’র সদস্য সচিব গোবিন্দ ভরদ্বাজ বলনে, ‘মেলানিজ়ম (কৃষ্ণবর্ণত্ব)-এর ফলে বাঘের আদি চেহারাটাই মুছে না যায়!’
পশ্চিম ভারত-সহ উত্তর পূর্বের পাহাড়ি অরণ্যে কালো চিতাবাঘের দেখা মেলে। তার নেপথ্যও রয়েছে মেলানিজম। তবে হলুদ কালো বাঘের রং কৃষ্ণ বর্ণে পরিণত হওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউই। প্রাণীবিজ্ঞানী টিএস মাথুরের মতে ‘এটি আসলে জিনগত সমস্যা।
প্রাণীবিশেষজ্ঞ উমা রামকৃষ্ণানের অনুমান, ইনব্রিডিং বা নিকট আত্মীয়তার মধ্যে প্রজননের ফলেই সিমলিপালে কালো বাঘের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তবে সেই মিলনে বাধা দেওয়া কারোরই সাধ্যের ব্যাপার নয়। মূলত ওই ব্যাঘ্র প্রকল্পের নওরঙ্গা রেঞ্জের বড়মকাবাড়ি এলাকাটাই কালো বাঘের ডেরা।
বাঘ বিশেষজ্ঞ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর বলেন, ‘বাঘের ইনব্রিডিং বন্ধ করা সহজ নয়। এমনকি ঠিক কোন বাঘের জিনে মেলানিন রয়েছে তা আগাম অনুমান করাও সম্ভব নয়। আবার এই কথাও ঠিক, বাঘিনীর জিনে মেলানিন রয়েছে মানেই পরবর্তী প্রজন্মের সব শাবকের গায়ের রং কালো হবে এমন নিশ্চয়তা নেই।’
যদিও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পর্যটন দপ্তর এই নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না বরং পর্যটক আকর্ষণ করতে তারা ‘কালো বাঘ সাফারি’ প্রচার করছে জোরকদমে। তবে বাঘ বিশেষজ্ঞ জয়দীপ কুণ্ডুর প্রশ্ন, ‘কালো বাঘ কতটা বাস্তব আর কতটা প্রচার সেটাও খতিয়ে দেখার বিষয়! আর মেলানিন ঘটিত কারণে যদি বাঘের বর্ণ কালো হয়ে থাকে তবে এই ঘটনা দেশের অন্যত্রও ঘটতে পারে। সজাগ থাকা উচিত সকলের।’