বায়ুদূষণ এখন শুধু পরিবেশের নয়, মানবস্বাস্থ্যেরও এক ভয়ঙ্কর শত্রু। প্রতিদিন আমরা যে বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি, তাতে ভেসে বেড়াচ্ছে অসংখ্য ক্ষতিকর ধূলিকণা ও বিষাক্ত পদার্থ। এর প্রভাব পড়ছে সরাসরি ফুসফুসে, দেখা দিচ্ছে শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস ও এমনকি ক্যানসারের মতো জটিল রোগও। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বায়ুদূষণের ক্ষতি ঠেকাতে জীবনযাপনের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসেও আনা দরকার পরিবর্তন। নিয়মিত কিছু খাবার খেলে ফুসফুসের সুরক্ষা সম্ভব।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন খাবার রাখবে আপনার ফুসফুসকে সুস্থ—
টমেটো: শ্বাসযন্ত্রের রক্ষাকবচ
টমেটোতে রয়েছে লাইকোপেন নামের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শ্বাসযন্ত্রে এক প্রকার সুরক্ষা স্তর তৈরি করে। এটি বাতাসে থাকা ক্ষতিকর ধূলিকণার প্রভাব ঠেকাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত টমেটো খেলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং ক্যানসারের আশঙ্কাও কমে।
লেবুজাতীয় ফল: ফুসফুসের ক্লিনজার
কমলা, লেবু, পেয়ারা বা আঙুরের মতো ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ ফল শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ফুসফুসে জমে থাকা দূষিত উপাদান দূর করে। নিয়মিত এসব ফল খেলে শ্বাসযন্ত্রের সুস্থতা বজায় থাকে।
তুলসী: প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার
তুলসীপাতা শুধু পূজায় নয়, শরীরেরও উপকারে লাগে। তুলসীর রস শ্বাসযন্ত্রের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং বায়ুদূষণের প্রভাব থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন সকালে কয়েকটি তুলসীপাতা চিবিয়ে খাওয়াই যথেষ্ট।
হলুদ: প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
হলুদের কুরকুমিন উপাদান দূষিত বায়ুর ক্ষতি থেকে ফুসফুসকে সুরক্ষিত রাখে। কফ ও অ্যাজমার সমস্যা কমাতেও এটি কার্যকর। ঘি বা দুধের সঙ্গে সামান্য হলুদ মিশিয়ে খেলে শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ অনেকটাই কমে।
গুড়: শ্বাসযন্ত্রের সহায়ক
গুড়ে থাকা খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তিলের সঙ্গে গুড় খেলে বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব কমে, একই সঙ্গে অ্যাজমা ও ব্রংকাইটিসের সমস্যায়ও উপকার মেলে।
সবুজ চা: দূষণ প্রতিরোধে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শক্তি
প্রতিদিন দুই কাপ সবুজ চা খেলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যায়। এতে থাকা ক্যাটেচিন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি রোধ করে এবং শ্বাসযন্ত্রকে রাখে সুস্থ।
আমলকি: রোগপ্রতিরোধে অগ্রণী
আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন সি আছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং যকৃত ও ফুসফুসকে ধূলিকণার ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। আয়ুর্বেদে আমলকির জুসকে ‘দেহের ভারসাম্য রক্ষাকারী’ বলা হয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—বায়ুদূষণের প্রভাব পুরোপুরি ঠেকানো না গেলেও সঠিক খাবারের মাধ্যমে শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা অনেকটা বাড়ানো যায়। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এসব খাবার রাখুন, নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসকে রাখুন নির্মল ও সুরক্ষিত।
#lunchhealthyfood

