সকালে ঘুম ভাঙার পর এক গ্লাস জল— বহুদিন ধরেই এটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বলে মনে করেন চিকিৎসক, পুষ্টিবিদ থেকে শুরু করে বড়দেরা। কিন্তু এই জলের তাপমাত্রা কি হওয়া উচিত— গরম জল নাকি ঠান্ডা? ছোট্ট এই সিদ্ধান্তই নাকি নির্ধারণ করতে পারে শরীরের ভেতরের কাজকর্মের গতিপথ। কোন জল কবে উপকারী, কার শরীর কোনটি সহজে গ্রহণ করে— তা জানলেই ঠিক হবে সকালের রুটিন।
গরম জল: হজমে আরাম, অন্ত্র সক্রিয়
দিনের শুরুতে গরম জল খেলে অন্ত্র ধীরে ধীরে জেগে ওঠে। জমে থাকা বর্জ্য নরম হয়ে বের হতে সুবিধা হয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও অনেকটাই কমে যায়।
গরম জল খাদ্যনালিকে হালকা প্রসারিত করে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়, অন্ত্রে তরঙ্গ (পেরিস্টলসিস) সৃষ্টি করে, ফলে খাবার সহজে প্রবাহিত হয়।
যাঁরা সকালে পেট ভার, গ্যাস বা বদহজমে ভোগেন— তাঁদের জন্য গরম জলই কার্যকর।
ঠান্ডা জল: সতেজতা বাড়ায়, তৎক্ষণাৎ চাঙ্গা করে
যাঁদের ঘুম কম হয় বা ক্লান্তি নিয়ে ঘুম ভাঙে, তাঁদের জন্য সকালে ঠান্ডা জল সতেজতা ফিরিয়ে আনে।
ঠান্ডা জল তাড়াতাড়ি শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়, তাই গরমকালে ব্যায়ামের পর ঠান্ডা জল পান শরীরকে দ্রুত হাইড্রেট করে।
স্নায়ুগুলিকে চট করে জাগিয়ে তোলে, মনোযোগ বাড়ায়।
জলের চাহিদা— কোন তাপমাত্রাই হোক, প্রয়োজন পর্যাপ্ত পান
শরীরের প্রতিক্রিয়া ভিন্ন হলেও গরম বা ঠান্ডা— দুই জলেরই মূল ভূমিকা জলীয়াংশ পূরণ করা।
যে তাপমাত্রায় আপনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, সেই জলেই দিনের শুরু করা উচিত। কারণ নিয়মিত পর্যাপ্ত জলপানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
রক্তপ্রবাহ: বিপরীত কার্যকারিতা
• গরম জল → রক্তনালীগুলো প্রসারিত হয়ে রক্তপ্রবাহ উন্নত হয়।
• ঠান্ডা জল → কিছুক্ষণ রক্তনালীর সংকোচন ঘটায়, ফলে আরামে নয়— সতেজতায় সাহায্য করে।
প্রয়োজন অনুযায়ী তাপমাত্রা বেছে নেওয়াই শ্রেয়।
ডিটক্সিফিকেশন: এগিয়ে গরম জল
শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সকালের জলপান খুবই জরুরি। এখানে গরম জল সামান্য এগিয়ে, কারণ—
অন্ত্রের গতিবিধি বাড়ায়
হজমক্রিয়া উন্নত করে
মলত্যাগে সুবিধা দেয়
ঠান্ডা জলও হাইড্রেশন বাড়িয়ে ডিটক্সে সাহায্য করে, কিন্তু বিপাকে প্রভাব কম।
শেষ কথা— কোনটি বেছে নেবেন?
এই দুই ধরনের জলই উপকারী, কারও জন্য গরম জল আর কারও জন্য ঠান্ডা জলই উপযুক্ত হতে পারে। শরীরের প্রকৃতি ও স্বচ্ছন্দতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন।
সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্যসমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ ও উপকারী।
আরও পড়ুন
পিরিয়ডের সময় শরীর সুস্থ রাখার ৬টি নিয়ম
