২০১৬ সালের বাতিল হওয়া এসএসসি প্যানেল নিয়ে বহু বিতর্ক, আন্দোলন, আদালতযুদ্ধ ও প্রত্যাশার পর ফের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগের ফল প্রকাশের পর গত মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত নথি যাচাইকরণ বা ভেরিফিকেশন। এই প্রক্রিয়ায় হাজির হয়েছেন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক থেকে শুরু করে নতুন পরীক্ষার্থীরাও। কিন্তু প্রথম তিন দিনেই যা প্রকাশ্যে এল, তা নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ঘিরে নতুন করে বিস্ফোরণ ঘটাল।
তিন দিনে ২৬ জনের ভুয়ো বা ভুল নথি ধরা পড়ল
কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভেরিফিকেশনের প্রথম তিন দিনে মোট ২৬ জন প্রার্থীর নথিতে গুরুতর গরমিল পাওয়া গেছে।
১৪ জন একাদশ শ্রেণির
১২ জন দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিপ্রার্থী
সবচেয়ে নজরকাড়া বিষয়—
বেশিরভাগ নথিই ভুয়ো শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার (Experience Certificate) সঙ্গে যুক্ত।
এছাড়াও কারও জাতির শংসাপত্রে অসঙ্গতি, কারও ব্যক্তিগত তথ্যের ভুল বা সন্দেহজনক নথি ধরা পড়েছে। এসব ভুল ইচ্ছাকৃত কি না তা কমিশন খতিয়ে দেখছে।
গরমিলের কেন্দ্রে অভিজ্ঞতার শংসাপত্র
নিয়োগে ১০ নম্বরের অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা। আর সেই জায়গাতেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির চিহ্ন মিলেছে।
অনেকেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সই-সিলসহ অফিসিয়াল সার্টিফিকেট জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। অভিযোগ, কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতই ভুয়ো নথি দিয়েছেন।
এসএসসির নতুন নির্দেশ—স্কুলের প্যাডে প্রধান শিক্ষকের লিখিত ঘোষণা
চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের প্রতিনিধি চিন্ময় মণ্ডল জানিয়েছেন, এবার কমিশন অতিরিক্ত সতর্কতার সঙ্গে
স্কুলের প্যাডে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র আনতে বলছে।
সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করতে হবে—
সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কতদিন ওই স্কুলে পড়িয়েছেন।
অনেক প্রার্থী সেই গুরুত্বপূর্ণ নথি আনেননি বলেই প্রথমেই সন্দেহ তৈরি হয়।
অনেকে ডাকা সত্ত্বেও ভেরিফিকেশনে হাজির নন
আরও বিস্ময়কর তথ্য—
ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পেলেও অনেক প্রার্থী ভেরিফিকেশনে হাজিরই হননি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও তাঁদের এই অনুপস্থিতি নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত কমিশনের
এসএসসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—
যাঁদের নথিতে গরমিল পাওয়া গেছে, তাঁরা ইচ্ছাকৃত ভুয়ো নথি জমা দিয়েছেন কি না তা তদন্ত করে দেখা হবে।
দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
২৬ নভেম্বর থেকে ইন্টারভিউ, দ্রুত শেষ হচ্ছে ভেরিফিকেশন
ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে ২৬ নভেম্বর থেকে।
তাই তড়িঘড়ি করেই ভেরিফিকেশন চলছে।
নবম–দশমের ফল শিগগিরই
এদিকে, আগামী সপ্তাহেই নবম–দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হতে পারে বলে সূত্রের খবর। ফলে গোটা শিক্ষা মহল আবারও তীব্র উত্তেজনার মধ্যে।
আরও পড়ুন
সপ্তাহ শেষে লাফিয়ে বাড়ল সোনার দাম
