লিউডে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মাত্র ৪০ বছর বয়সে অকস্মাৎ শেষ হয়ে গেল জনপ্রিয় চিত্রগ্রাহক সৌম্যদীপ্ত গুইন, যাঁকে পুরো ইন্ডাস্ট্রি ভিকি নামেই চিনত। শুক্রবার তাঁর কসবার বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবার ও কাছের মানুষজন এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না—এত প্রাণবন্ত, এত কর্মচঞ্চল একজন মানুষ এভাবে চলে যেতে পারেন!
হঠাৎ মৃত্যু, স্তব্ধ টলিপাড়া
সূত্রের খবর, কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ভিকি। তবে তাঁর সবচেয়ে কাছের সহকর্মীরা বলছেন, কাজের মধ্যে তাঁকে কখনও হতাশ বা ভেঙে পড়া মনে হয়নি। বিশেষ করে পরিচালক রাজা চন্দ, যাঁর সঙ্গে ভিকির দীর্ঘদিনের কাজের সম্পর্ক।
রাজা চন্দ TV9 বাংলাকে বলেন—
“কখনও মনে হয়নি ভিকি অবসাদে ভুগছিল। নিয়মিত কাজ করত। আমার ৮০ শতাংশ ছবির চিত্রগ্রাহকই ছিল ও। প্রথম সহ-চিত্রগ্রাহক থেকে ক্যামেরাম্যান—সবটাই হয়েছে আমার ছবির হাত ধরে। ও ছিল আমার ডান হাত। এমন একজন ভাই-বন্ধু চলে গেল—বিশ্বাস করতে পারছি না।”
১৫ বছরেরও বেশি সময়ের বন্ধুত্ব ও কর্ম-সম্পর্ক
ভিকি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালক প্রেমেন্দ্র বিকাশ চাকীর সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁদের বন্ধুত্বও ছিল ব্যক্তিগত জীবনে গভীর। টলিউডে ক্যামেরার পেছনের জগতে ভিকির দক্ষতা, নৈপুণ্য ও কাজের নেশার কথা বহু পরিচালক-অভিনেতাই জানেন।
তিনি বর্তমানে কাজ করছিলেন রাজা চন্দ পরিচালিত ‘হালুম’ ছবিতে। ফলে তাঁর প্রয়াণে ছবির ইউনিটও মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়েছে।
অবসাদের কারণ কী? তদন্তে নেমেছে পুলিশ
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে কাজের চাপ ও ব্যস্ততা থেকে কোনও মানসিক অশান্তি তৈরি হয়েছিল। তবে পরিবারের দাবি, স্পষ্ট কোনও কারণ জানা নেই।
দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পরিবারে স্ত্রী ও এক শিশুকন্যা
অতীতে বহু চিত্রগ্রাহকের পাশে দাঁড়ানো ফেডারেশনও ভিকির পরিবারের প্রতি সহায়তার ঘোষণা করেছে। নিয়মমতো ১৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হবে তাঁর পরিবারের হাতে।
স্ত্রী ও এক বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে এখন গভীর সংকটে ভিকির পরিবার।
শোকের ছায়ায় সিনেপাড়া
খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোকবিহ্বল টলিপাড়া। শিল্পীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকজ্ঞাপন করছেন একের পর এক। সকলের প্রশ্ন—
“এত প্রিয়, এত মেধাবী একজন মানুষ কেন এত তাড়াতাড়ি হার মানলেন?”
তবে অবসাদের প্রকৃত কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। ভিকির চলে যাওয়া টলিউডের ক্যামেরার পেছনের দুনিয়ায় এক অপূরণীয় ক্ষতি।
