টলিউডের এক অনন্য অভিনয়–পরিবারের নাম সব্যসাচী চক্রবর্তী ও মিঠু চক্রবর্তী। স্বামী-স্ত্রী থেকে দুই ছেলে—গৌরব ও অর্জুন—সকলেই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত। বাঙালি দর্শকের কাছে সব্যসাচী মানেই ‘ফেলুদা’; আর তাঁর সহধর্মিনী মিঠু চক্রবর্তী বড়পর্দা থেকে ছোটপর্দা—সব মাধ্যমেই দাপটের সঙ্গে কাজ করে আসছেন। দীর্ঘ অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে ক্যানসারকে জয় করে তিনি আবার অভিনয়ে ফিরেছেন।
তবে তাঁদের দাম্পত্যের নেপথ্যে রয়েছে এমন এক গল্প, যা আজও অনেকের অজানা। বিশ্বাস করা কঠিন হলেও এটাই সত্যি—একসময় মিঠু চক্রবর্তী সব্যসাচীকে ‘মামা’ বলে ডাকতেন!
‘মামা-ভাগ্নি’ ডাক থেকে স্বামী-স্ত্রী—অদ্ভুত এক সম্পর্কের শুরু
একসময় শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় শো ‘অপুর সংসার’-এ এসে নিজেরাই এই মজার গল্প প্রকাশ করেছিলেন সব্যসাচী ও মিঠু।
মিঠুর বাবা ছিলেন এয়ার ফোর্সের ফাইটার পাইলট—শাসন-শৃঙ্খলায় বড় হওয়া। তাঁদের পরিবারে দূরসম্পর্কের আত্মীয়তা ছিল সব্যসাচীদের সঙ্গে। সেই সূত্রেই ছোটবেলায় মিঠুর সঙ্গে দেখা হয় সব্যসাচীর।
মিঠু স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন—
“তখন টেপজামা পরে পাঁচিলের ওপর হাঁটছি। ওরা আমাদের বাড়িতে ঢুকছে। ওই বয়স থেকে আমি ওকে চিনি।”
সঞ্চালক শাশ্বতের মজার প্রশ্ন—ছোটবেলার সে স্মৃতি কি তবে বিয়ের সময় মনে পড়েনি? উত্তরে মিঠু হেসে বলেন—
“তখন তো বিয়ে কোথায়? তখন তো বেণু মামা!”
এই ‘মামা’ ডাক যে পরবর্তী জীবনে ‘স্বামী’ হয়ে উঠবে—সে ভাবনা অবশ্য কারওই ছিল না।
অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ থেকে জীবনের নতুন অধ্যায়
১৯৮৬ সালে সব্যসাচী ও মিঠুর বিয়ে হয়। দু’জনেই তখন দিল্লিতে থাকতেন। মিঠুর কথায়,
“এটা ছিল অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ। মা–দের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল।”
বিয়ের পরই মিঠুর জীবনে আসে অভিনয়ের সুযোগ। প্রথম সন্তানের জন্মের পর শ্বশুরবাড়ির থিয়েটার–প্রীতি তাঁকে অভিনয়ের জগতে নিয়ে আসে। ধীরে ধীরে ছোটপর্দা–বড়পর্দায় নিজের জায়গা শক্ত করেন অভিনেত্রী।

আরও পড়ুন
ধর্মেন্দ্র-হেমা সম্পর্কের আবেগ ও দ্বন্দ্ব নতুন করে সামনে: স্মরণসভায় চোখ ভেজালেন হেমা মালিনী
তাঁদের ‘ভরা সংসার’
দীর্ঘ ৩৯ বছরের দাম্পত্য জীবনে আজ সব্যসাচী–মিঠুর বাড়ি ভরে আছে তাঁদের দুই ছেলে—গৌরব ও অর্জুন—বউমা ও নাতিকে নিয়ে। কাজ, পরিবার ও সম্পর্ক—সব ক্ষেত্রেই তাঁরা টলিউডের অন্যতম সফল দম্পতি হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুন
‘বিচার চাই’: ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিতর্কে কৌশিকী পাল, কী বললেন ‘জুঁই’?
একসময় ‘মামা’ বলে ডাকা মানুষটিই আজ জীবনের সবচেয়ে কাছের সঙ্গী—এ যেন বাস্তব জীবনের এক অনন্য প্রেমকাহিনি, যা শোনার পর দর্শক-অনুরাগীদের মুখে একটিই কথা—“বাস্তবের গল্প কখনও কখনও সিনেমাকেও হার মানায়।”
আরও পড়ুন
Nusrat: নতুন শুরুতে কিছুটা সবুজ রং যোগ করলেন অভিনেত্রী নুসরত, দেখুন সেই মনমাতানো ছবি