বলিউডে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রয়াত হলেন বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মধুমতী। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। সোমবার (১৫ অক্টোবর) ঘুমের মধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেত্রী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
অভিনয়জগত তাঁকে চিনত মধুমতী নামে, কিন্তু তাঁর আসল নাম ছিল হুটোক্সি রিপোর্টার। ১৯৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই নাচের প্রতি গভীর টান ছিল মধুমতীর। ভরতনাট্যম, কত্থক, কথাকলি এবং মণিপুরি— একাধিক ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যে ছিল তাঁর পারদর্শিতা। ১৯৫৭ সালে এক মরাঠি চলচ্চিত্রে নৃত্যশিল্পী হিসেবে তাঁর চলচ্চিত্রজগতে পথচলা শুরু হয়।
এর পর বলিউডে একে একে অভিনয় করেছেন দিলীপ কুমার, ধর্মেন্দ্র, জিতেন্দ্র-র মতো তারকাদের সঙ্গে। ‘আঁখে’, ‘টাওয়ার হাউজ়’, ‘শিকারি’, ‘মুঝে জিনে দো’-র মতো জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করে দর্শকমনে জায়গা করে নেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁর নৃত্যশৈলীতেও ছিল আলাদা ঔজ্জ্বল্য। অনেক সময় তাঁকে হেলেন-এর সঙ্গে তুলনা করা হত।
অভিনেত্রী হিসেবে যেমন সফল ছিলেন, তেমনই নৃত্য প্রশিক্ষক হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। বহু তারকা তাঁর কাছ থেকে নৃত্যের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
মধুমতীর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া বলিউডে। শোকপ্রকাশ করেছেন অভিনেতা বিন্দু দারা সিংহ, অক্ষয় কুমার, চাঙ্কি পাণ্ডে, সংগীতশিল্পী জসবিন্দ্র নরুলা-সহ অনেকেই। বিন্দু দারা সিংহ সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “শিক্ষিকা ও পথপ্রদর্শক মধুমতীজির আত্মার শান্তি কামনা করি। সকলের ভালবাসা ও আশীর্বাদ নিয়ে তিনি এক সুন্দর জীবনযাপন করেছেন। আমরা অনেকেই ওঁর থেকে নৃত্য শিখেছি।”
জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেল সাড়ে চারটেয় ওশিওয়ারা শ্মশানে অভিনেত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
ব্যক্তিগত জীবনে মধুমতী বিয়ে করেছিলেন নৃত্যশিল্পী দীপক মনোহরকে। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৯ বছর। দীপক বয়সে অনেকটাই বড় ছিলেন এবং চার সন্তানের বাবা ছিলেন। তাঁর প্রথম স্ত্রীর অকালমৃত্যুর পর মধুমতীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
নাচ, অভিনয়, আর শিক্ষাদান— এই তিনের মধ্য দিয়েই এক সমৃদ্ধ জীবন কাটিয়ে গেলেন মধুমতী। তাঁর প্রয়াণে এক যুগের অবসান বলেই মনে করছেন বলিউড মহল।