আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনা পরিদর্শনে হাজির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, দেখা করলেন আহতদের সঙ্গে

রাত কেটে পরদিন সকালের আলো ফুটলেও গুজরাটের আহমেদাবাদের মেঘানিনগরের বাসিন্দাদের চোখ মুখ থেকে ভয়ের ছায়া সরছে না। গতকাল দুপুরে হঠাৎই যে বিশাল বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল আহমেদাবাদ তা শিউরে ওঠার মতন। বিমান দুর্ঘটনার পর গোটা এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। আমজনতাকে ঘটনাস্থল থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিমান দুর্ঘটনার স্থানটি ঘুরে দেখার পাশাপাশি তিনি দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করেন।

গতকাল ১২ই জুন বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা বেজে ৩৮ মিনিটে সদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি যাত্রা শুরু করে। কিন্তু রানওয়ে থেকে টেক-অফের কয়েক মুহূর্তের মধ্যে বিমানটির সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রানওয়ে থেকে টেক-অফের কয়েক মিনিটের মধ্যে বিমানটি একটি জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে পড়ে এবং বি জে মেডিকেল কলেজের ছাত্র হস্টেলের ডাইনিং রুমের মধ্যে ভেঙে পড়ে।

ওই বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জন মারা গিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এর পাশাপাশি মেডিকেল কলেজের ছাত্র হোস্টেলের কমপক্ষে ৫ জন পড়ুয়া প্রাণ হারিয়েছেন। এদিকে বিমানে থাকা একমাত্র যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশ প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। এদিকে মেডিকেল কলেজের ডাইনিং রুমে খাবার নিয়ে সদ্য খেতে বসেছিলেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। কিন্তু সেইসময় প্লেনটি ওই বিল্ডিং-এ ধাক্কা মারে। বেশ কয়েকজন পড়ুয়া চাপা পড়ে যান। বাকিরা প্রাণে বাঁচতে পালাবার চেষ্টা করেন। ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা গিয়েছে চারিদিকে ছাড়ানো রয়েছে খাবারের থালা।

কিন্তু সকলের মনে একটাই প্রশ্ন, এয়ার ইন্ডিয়ার এমন বিশ্বস্ত বিমানটি এভাবে দুর্ঘটনার মুখে কীভাবে পড়ল? এদিকে পাইলটদের মতে, বিমান টেক-অফের আগে যদি কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায় তবে পাইলট টেক-অফ বাতিল করে দেন। কিন্তু এক্ষেত্রে বিমানের পাইলট সুমিত সাবারওয়াল তা করেননি। অর্থাৎ অনুমান করা যায়, বিমানের সবকিছু ঠিকই ছিল। তবে কি যান্ত্রিক ত্রুটি? নাকি কোনও পাখির ধাক্কা বিমানের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল?

কী কারণে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল তা এখনও স্পষ্ট নয়। এরই মাঝে এদিন শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। দুর্ঘটনার সমস্ত জায়গা তিনি খুঁটিয়ে দেখেন। এর পাশাপাশি আহতদের সঙ্গে তিনি হাসপাতালে দেখাও করেন। একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। রমেশ বর্তমানে আহমেদাবাদের সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি জানিয়েছেন, বিমানটি টেক-অফের ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি বিকট শব্দ শুনতে পান।

এরপর বিমানটি ভেঙে পড়ার সময় তিনি সিট সহ বিমান থেকে ছিটকে গিয়ে মেডিকেল কলেজের কোনও একটি অংশে পড়েন। তার সিট বেল্ট বাঁধা অবস্থায় ছিল। এরপর তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন। তার সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী। দুর্ঘটনায় আহত সকলেই আহমেদাবাদের সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও করেন। এর পাশাপাশি বিমানের ব্ল্যাক বক্সটির খোঁজ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সেটি উদ্ধার করা যায়নি।

error: Content is protected !!