Dearness Allowance: পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলা এবার সুপ্রিম কোর্টে এক নতুন দিশা পেয়েছে। দীর্ঘ দিনের এই লড়াইয়ের শেষ পর্যায়ে এসে মামলাকারীদের পক্ষ থেকে জমা পড়া একটি লিখিত আবেদন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই আবেদনে এমন কিছু শক্তিশালী যুক্তি ও প্রমাণ পেশ করা হয়েছে যা রাজ্য সরকারের আগের হলফনামাকে দুর্বল করে দিতে পারে এবং কর্মচারীদের পক্ষে রায় আনতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মামলার বর্তমান অবস্থা
পুজোর আগেই সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্য সরকার ও মামলাকারীরা নিজেদের লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের হলফনামার পাল্টা হিসেবে সরকারি কর্মচারীদের পক্ষ থেকেও বিস্তারিত লিখিত নথি দেওয়া হয়েছে, যেখানে রাজ্যের দেওয়া তথ্যের একাধিক অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়েছে। আদালত এখন মামলার রায় সংরক্ষণ করেছে, অর্থাৎ শীঘ্রই রায় ঘোষণা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
খবর
উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায় চাঞ্চল্য! চিকিৎসক পরিবারের নাম বাংলাদেশ ও ভারতের ভোটার তালিকায় একসঙ্গে
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ভূমিকা
ডিএ মামলায় কনফেডারেশনের পাশাপাশি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ভূমিকা এবার বিশেষভাবে নজর কাড়ছে। এই মঞ্চের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া আবেদনটিতে ডিএ-কে কর্মচারীদের মৌলিক ও আইনসম্মত অধিকার হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায়গুলির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ডিএ কোনো দান বা অনুগ্রহ নয়, বরং এটি কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা।
রাজ্য সরকারের আর্থিক যুক্তির খণ্ডন
রাজ্য সরকার যে আর্থিক সমস্যার কথা বলে ডিএ না দেওয়ার কারণ দেখিয়েছে, সেই যুক্তির বিরুদ্ধে আবেদনকারীরা একাধিক তথ্য ও প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। আবেদন অনুযায়ী, কেরালা, মেঘালয়, সিকিমের মতো রাজ্যগুলি নিয়মিতভাবে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিচ্ছে, অথচ পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক অবস্থা তাদের চেয়ে খারাপ নয়। বরং রাজ্যের অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল, এমন দাবিও করা হয়েছে।
বৈষম্যের অভিযোগ ও সংবিধান লঙ্ঘনের ইঙ্গিত
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য করছে। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে— দিল্লির বঙ্গভবন বা চেন্নাইয়ের যুব হোস্টেলে কর্মরত পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাচ্ছেন, কিন্তু রাজ্যের অভ্যন্তরে কর্মরতরা তা পাচ্ছেন না। এই বৈষম্য সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে বলে দাবি তুলেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
পূর্ববর্তী রায় ও লড়াইয়ের ইতিহাস
ডিএ-র দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা বহু বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকার একাধিকবার পরাজিত হয়েছে। আদালত বারবার ডিএ-কে কর্মচারীদের আইনি অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবুও রাজ্য সরকার সেই রায়গুলিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায়। এখন সেই মামলাই সারা দেশের নজর কাড়ছে।
রায় কবে আসতে পারে?
সুপ্রিম কোর্টের দীপাবলি ছুটি ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ছুটির আগেই রায় ঘোষণার সম্ভাবনা থাকলেও সেটি নিশ্চিত নয়। অনেকেই মনে করছেন, রায় নভেম্বর বা এই বছরের মধ্যেই প্রকাশ পেতে পারে। আদালতের পক্ষ থেকে এখনও কোনও নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।
সম্ভাব্য প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলার রায় শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। যদি কর্মচারীদের পক্ষে রায় যায়, তাহলে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ প্রদানের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে এবং অন্যান্য রাজ্যেও তার প্রভাব পড়বে।
সারকথা, ডিএ মামলার চূড়ান্ত রায় এখন সময়ের অপেক্ষা। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, কনফেডারেশন ও অন্যান্য সংগঠনের প্রচেষ্টায় এই লড়াই নতুন গতি পেয়েছে। রাজ্য সরকার আর কর্মচারীদের যুক্তির মধ্যে ভারসাম্য কতটা বজায় থাকে, সেটাই এখন দেখার।
সম্ভাব্য রায় ঘোষণা: অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের শুরুতে
বর্তমান অবস্থা: শুনানি সম্পন্ন, রায় সংরক্ষিত
আদালত: সুপ্রিম কোর্ট অব ইন্ডিয়া
মূল পক্ষ: পশ্চিমবঙ্গ সরকার বনাম রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও সংগঠনসমূহ
খবর
সংকটে উত্তর কলকাতার ঐতিহ্য, হাতে টানা রিকশাচালকদের নবান্নের দোরগোড়ায় আবেদন
#WestBengalDACase #SupremeCourt #DearnessAllowance #WBGovtEmployees #SangramiJouthaMancha #WBCM #ROPA2009 #DAHearing #IndianJudiciary #PublicSectorRights #WBCS #EmployeeWelfare #DAJudgement #IndiaNews #DigitalNews