প্রতীকি রাজনীতিবিদ শিবরাজ পাতিলের জীবন ও রাজনৈতিক কর্মজীবন ভারতের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৩৫ সালের ১২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করা পাতিল দীর্ঘ সময় ভারতের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি লাতুর মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের প্রধান হিসাবে তার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন এবং সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। পরে সাতবার লাতুর লোকসভা আসনে জয়লাভ করেন, যা তার জনপ্রিয়তা এবং জননেতৃत्त्वের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত।
শিবরাজ পাতিল কেন্দ্রীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময় তিনি দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বও সামলেছেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য পদ ছিল ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত লোকসভার দশম স্পিকারের দায়িত্বেও থাকা, যেখানে তিনি সংসদের কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনা করেন।
সরকারি দায়িত্বের বাইরে পাতিল ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড়ের প্রশাসক এবং পাঞ্জাবের রাজ্যপাল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি তার অতিথিপরায়ণ ও নিরপেক্ষ আচরণের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন।
দীর্ঘদিন অসুস্থতার পর লাতুরে নিজের ব্যক্তিগত বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন শিবরাজ পাতিল। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি মৃত্যুকালে এক ছেলে শৈলেশ পুত্রবধূ অর্চনা ও দুই নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার পুত্রবধূ ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা।
একজন কংগ্রেস নেতা মন্তব্য করেছেন যে পাতিল তাঁর মর্যাদাপূর্ণ আচরণের জন্য পরিচিত ছিলেন এবং কখনও ব্যক্তিগত আক্রমণে লিপ্ত হননি। তিনি সাধারণত প্রকাশ্য বক্তৃতা বা ব্যক্তিগত কথোপকথনে সদয় ও পরিমিত শব্দ ব্যবহার করতেন। মারাঠি, ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় তাঁর দক্ষতা এবং সাংবিধানিক বিষয়ে গভীর জ্ঞান তাঁকে তাঁর সময়ের অন্যতম সম্মানিত সংসদ সদস্যে পরিণত করেছিল।
আরও পড়ুন
ধর্মেন্দ্র-হেমা সম্পর্কের আবেগ ও দ্বন্দ্ব নতুন করে সামনে: স্মরণসভায় চোখ ভেজালেন হেমা মালিনী
শিবরাজ পাতিল শুধু একজন রাজনীতিকই ছিলেন না; তিনি ভারতের সংবিধান, রাজনীতি ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল একজন statesman ছিলেন। তাঁর বিদেহী জীবনের স্মৃতি বহু পথিকৃতের হৃদয়ে দীর্ঘদিন অম্লান থাকবে।
আরও পড়ুন
ফের ঊর্ধ্বমুখী, দেশের বড় শহরগুলিতে সোনার দামে ব্যাপক ওঠানামা