মহালয়ার সকালে বড় সিদ্ধান্ত রাণাঘাট পুজো উদ্যোক্তাদের

ভেস্তে গেলো রাণাঘাটের ১১২ ফুটের দুর্গা পুজো। মহালয়ার দিন সকালে পুজোর উদ্যোক্তারা জানিয়ে দিলেন এবছরের মতন এই পুজো হবে না। তারা জানিয়েছেন মামলা লড়ার টাকা না থাকায় এবছরের পুজো বাতিল করা হয়েছে। পুজো উদ্যোক্তাদের কথায়, তাদের প্রতিমা বিশ্বের সর্ববৃহৎ দুর্গা প্রতিমা হবে এমনটাই চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু অবশেষে রানাঘাটের কামালপুর এলাকার অভিযান সঙ্ঘ ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা দিয়ে পুজো করার সিদ্ধান্ত বাতিল করলো।

এই পুজো নিয়ে আইনি জটিলতায় আটকে গিয়েছিলেন পুজো উদ্যোক্তারা। যিনি আদালতে গিয়েছিলেন তার কথায়, “আদালতে জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়েছিলেন আমাদের, যাতে বিবেচনা করে দেখা হয়। আসলে এই পুজোটায় একটা গোটা গ্রামকে তুলে আনার প্রয়াস ছিল। গ্রামের পরিকাঠামোই উন্নত হত। কারণ গ্রামের ছেলেমেয়েরাই কাজ করছিল। এখন পর্যন্ত ৬০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এটা গ্রামবাসীদেরই টাকা। আদালতে যাওয়ার মতো, গ্রামবাসীদের কাছে আর টাকা নেই। চাঁদা দেওয়ার মতো পরিস্থিতিটুকুও নেই। আদালতে গেলে তো পয়সা লাগে।”

পুজো উদ্যোক্তাদের কথায়, তাদের অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিজীবী। তাই তাদের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা বেশ সমস্যার। ইতিমধ্যে পুজোর কাজের জন্য ৬০ লক্ষ টাকা খরচা হওয়ায় তাদের কাছে মামলা লড়ার টাকা নেই। শুধু টাকা নয়, ৪০ বিঘা জমি তারা পুজোর ফসল না করে রেখে দিয়েছিলেন পুজোর জন্য। এতকিছুর পর তাদের পুজো না হওয়ার জন্য কেঁদে ফেলেন এক মহিলা।

তার কথায়, “আমাদের পুজো শেষ। গ্রামবাসী সবার চোখে জল। আশপাশের গ্রামের মানুষও এটাই বলছেন।” জানা যাচ্ছে, এই পুজোতে দুর্গার মূর্তির উচ্চতা ১১২ ফুট হওয়ার কথা ছিল। যা বিশ্বের অন্যতম বড় দুর্গা হতে পারতো। কিন্তু এত বেশি উচ্চতার জন্য অনুমতি দেননি নদিয়ার জেলাশাসক। জেলাশাসকের কথায়, “বিদ্যুৎ দফতর, দমকল, পুলিশ, বিডিও এবং রানাঘাটের মহকুমা শাসক (এসডিও) আবেদন বাতিল করেছেন।”

এই বিষয়ে বিদ্যুৎ দফতরের বক্তব্য, “ওই পুজোতে যা প্যান্ডেল হবে তাতে ২৫ থেকে ৩০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ-এর প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু ৩ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে। এছাড়া পুজোর দিনগুলিতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় হতে পারে যার কারণে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই সবকিছু মাথায় রেখেই এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” এরপর বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টে ওঠে। তবে হাইকোর্টের তরফে নদিয়ার জেলাশাসকের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। অবশেষে পুজো বাতিল করলেন পুজো উদ্যোক্তারা।