গত ৮ই আগস্ট মধ্যরাতে আর জি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যায় বারংবার একটিই নাম উঠে আসছে। আর সেটি হলো সন্দীপ ঘোষ। সন্দীপ ঘোষ আর জি কর মেডিকেল হাসপাতালে অধ্যক্ষ। তবে বর্তমানে তিনি প্রাক্তন। মহিলা চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে উঠে আসছে একাধিক অভিযোগ। শুধুমাত্র হাসপাতাল চত্বরে নয়, তার আগের বাসস্থানের স্থানীয়দের থেকেও উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
প্রতিবেশীদের কথায়, সন্দীপ ঘোষ আগে থাকতেন বারাসাতের রথতলা মোড় সংলগ্ন হৃদয়পুরের মল্লিকবাগানে। সেখানকার স্থানীয়দের দাবি, সন্দীপ ঘোষের ব্যবহার ছিল যেমন কঠোর তেমনি নির্মম। ওই বাড়িতে থাকাকালীন বাড়ির নীচে একটি চেম্বার খোলেন তিনি। সেখানে রোগী দেখতেন। প্রতিবেশীদের কথায়, তিনি রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন না। এর পাশাপাশি তাকে রিপোর্ট দেখানোর জন্য আলাদা করে টাকা দিতে হতো।
এর পাশাপাশি আরেকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার কথা জানায় সেখানকার স্থানীয়রা। সন্দীপ ঘোষ তার স্ত্রী-এর উপর পাশবিক নির্যাতন করতেন। সদ্য সন্তান জন্ম দেওয়া স্ত্রী-এর পেটে লাথি মারেন তিনি। এরপর স্থানীয়রা সেখানে উপস্থিত হয়ে সন্দীপ ঘোষের স্ত্রী-কে বাঁচিয়ে আনেন। সেইসময় ১৪ দিনের শিশুটির গায়ে ছিল না কোনো কাপড়। সেই অবস্থায় সন্দীপ ঘোষের স্ত্রী কোনোরকমে নাইটি পরে সদ্য জন্ম দেওয়া সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন।
এদিকে সন্দীপ ঘোষ দায়িত্ব থাকাকালীন আর জি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়া চিকিৎসকেরা। তাদের দাবি, অধ্যক্ষকে অপসারণ করতে হবে। এরপর রাজ্য সরকারের তরফে সেই দাবি মেনে সন্দীপ ঘোষকে অধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ করা হয়। কিন্তু ঘটনার মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে তাকে বদলি করে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষ পদে বহাল করা হয়।
এরপর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা আন্দোলনে সরব হন এবং জানিয়ে দেন তারা সন্দীপ ঘোষকে কলেজে প্রবেশ করতে দেবেন না। এরপর পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরেে সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষর পদে রাখা থেকে বিরত থাকে স্বাস্থ্যভবন।
আরও পড়ুন,
*স্বাধীনতা দিবসে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সরব নরেন্দ্র মোদি, ৩টি বড় ঘোষণা