প্রভু শ্রী রাম নয়। ওই মন্দিরে মূল ভগবান লক্ষ্মণ। প্রত্যেকদিন ওই মন্দিরে শয়ে শয়ে অনুগামীরা ভিড় করে। যদিও রাম সীতার মূর্তি পাশেই রয়েছে। ওইখানেও অনুগামীরা মাথা ঠেকান। তাহলে লক্ষণ কেন মন্দিরের মূলত ভগবান? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছেন রাক্ষসী সুর্পনখা। খুব্ধ হয়ে গিয়ে তার নাসিকা কাটলেন লক্ষণ। প্রতিকার করতে রাবণ সীতাকে ধরে নিয়ে গেলেন। পরের ঘটনা কমবেশি সবাই জানে। তবে যে জায়গা স্বর্গ না কার নাসিকা কাঁটা পড়েছিল, ওইখানে লক্ষণকে আজও পুজো করা হয়। শোনা যায় রাষ্ট্রের একমাত্র লক্ষণ মন্দির ওইখানেই।
দাদা-ভাইয়ের সম্পর্ক বোঝাতে রাম-লক্ষণ এর উদাহরণ দেওয়া হয়। মহাকাব্যে লক্ষণের চরিত্রটি উপমা হিসেবেই রয়ে গেছে। বড় ভাই বনবাসে চলে যাচ্ছে শুনে পরিবার আত্মীয়-স্বজন পরিত্যাগ করে তিনিও সাথে গেলেন। সারা জীবন দাদার পদতলে সমর্পণ করে কাটিয়ে দিল কঠিন জীবন। ১৪ বছর বনে কাটালেন। তারমধ্যেই ঘটে গেল একের পর এক ঘটনা। এমনকি লক্ষণকে অনেকবার মৃত্যুর সম্মুখেও পড়তে হয়েছিল। তবে লক্ষণ বড় ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা এতোটুকু কমতি রাখেনি। তাই রাষ্ট্রের যেকোনো রাম মন্দিরে একইভাবে অর্চনা করা হয় তার। রামের পাশেই দেখা যায় সীতা ও লক্ষণের প্রতিমা।
তবে মুম্বাইয়ের এক মন্দিরে প্রধান ভগবান লক্ষণ। রামের মূর্তি পাশে থাকলেও, মন্দিরটিকে সকলে লক্ষণের মন্দির হিসেবেই জানে। অনেকে আবার বলেন এটা নাকি রাষ্ট্রের একমাত্র লক্ষণ মন্দির। যদিও এই নিয়ে সংশয় রয়েছে। উত্তর ভারতে কিছুটা জায়গায় আরো লক্ষণ মন্দির আছে বলে কেউ কেউ দাবি করছে। কিন্তু এই মন্দিরে মহিমা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন না কেউ। মন্দিরকে ঘিরে অনেক পৌরাণিক ঘটনা রয়েছে। শোনা যায় এই স্থানেই নাকি সুর্পনাকার নাসিকা কেটেছিল লক্ষণ। এমনকি লক্ষণ এই জায়গাতেই অনেক দিন বড় ভাই রামের সাথে কাটিয়েছিল। তাই বড় করে এখানে লক্ষণের অর্চনা করা হয়।
এমনিতেই এই রাষ্ট্রে মন্দির কম নেই। তবে বেশিরভাগ মন্দিরে ভগবান শিব, দুর্গা বা নারায়ণ। কিছুদিন আগে রাম মন্দির উদ্বোধন ঘিরে বেশ হট্টগোল পড়েছিল। ওইখানেও শ্রী রামকেই মূল ভগবান হিসেবে পুজো করা হয়। তাছাড়া রাষ্ট্রের অন্যান্য মন্দিরে রামকে মাঝখানে রেখেই অর্চনা করা হয় সীতা ,লক্ষন বা হনুমান। মুম্বাইয়ের এই মন্দিরে শুধুমাত্র লক্ষণের মন্দির হিসাবে দেখা যায়। এইখানে রামায়ণের বিভিন্ন অংশের প্রতিমা হিসেবে রাখা হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুর্পনাকার নাসিকা ছেদ করার দৃশ্যটি। এটাও মন্দিরের সম্মুখে প্রতিমা হিসাবে দৃশ্যমান। ওইখানকার নিবাসীরা তো অবশ্যই, মুম্বাইয়ে ভ্রমণকারীরাও এখান থেকে ঘুরে যায়। যার জন্য প্রত্যেক বছর আরো পরিচিত হচ্ছে রাষ্ট্রের একমাত্র লক্ষণ মন্দির।