দক্ষিণ ব্রাজিলের পারানা প্রদেশে ভয়াবহ টর্নেডো হানায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রিও বনিতো ডো ইগুয়াকু শহর। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় মাত্র কয়েক মিনিটের দাপটে শহরটিকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে ঘূর্ণিঝড়টি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ঘটনায় অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ৭৫০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৯ জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন পারানা সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির প্রধান ফার্নান্ডো শানিগ।
১৪ হাজার মানুষের শহর ধ্বংসস্তূপে
রিও বনিতো ডো ইগুয়াকু—১৪ হাজার মানুষের এই জনপদকে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, আর যেগুলো টিকে আছে সেগুলোর দরজা-জানলা, ছাদ এবং আসবাবপত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
টর্নেডোর গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার, যা কয়েক মুহূর্তেই পুরো শহরকে বিশৃঙ্খলার চেহারা দেয়। প্রচণ্ড বাতাসের ঝাপটায় রাস্তায় থাকা গাড়িগুলো খেলনার মতো উড়ে যায়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বহু এলাকা অন্ধকারে তলিয়ে যায়।
উদ্ধার অভিযান জোরদার
ধ্বংসস্তূপের ভিতর আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন, ব্রাজিল সরকার ও পারানা প্রদেশের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী। তল্লাশি চলছে প্রতিটি ভাঙা বাড়ির ভিতরে। অনেক বাসিন্দার এখনও খোঁজ মেলেনি।
অস্থায়ী আশ্রয় শিবির তৈরি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী শহরগুলোতে। সেখানে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে যাঁরা গৃহহীন হয়েছেন বা বাড়ি ফিরে যাওয়া আপাতত সম্ভব নয়।
‘ফিরে এসে দেখি আমার মাথার উপর ছাদ নেই’
স্থানীয় বাসিন্দা নিরু সাবাদিনি নিজের চোখে দেখা বিপর্যয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,
“যখন টর্নেডো আসে, তখন আমি শহরের বাইরে ছিলাম। ফিরে এসে দেখি আমার মাথার উপর ছাদ নেই। আমি এখন গৃহহীন। বাড়ি নতুন করে তৈরি করতে কত সময় লাগবে জানি না।”
এমন পরিস্থিতিতে বহু মানুষ সব হারিয়ে দিশেহারা। কেউ হারিয়েছেন বাড়ি, কেউ কর্মস্থল; কেউবা খুঁজে পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যদের।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে
টর্নেডো দীর্ঘসময় স্থায়ী হয়নি ঠিকই, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই বিধ্বংসী ক্ষতি করে গেছে। প্রশাসনের মতে, শহর পুনর্গঠন করতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে। ঠিক কবে মানুষ তাঁদের নিজ নিজ ঘরে ফিরতে পারবেন, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।
এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—আহতদের চিকিৎসা, গৃহহীনদের নিরাপত্তা এবং নিখোঁজদের সন্ধান। এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর কঠিন লড়াই শুরু হয়েছে পুরো এলাকার।
প্রশ্নোত্তর (FAQ)
1. প্রশ্ন: টর্নেডোটি কোথায় আঘাত হানে?
উত্তর: ব্রাজিলের পারানা প্রদেশের রিও বনিতো ডো ইগুয়াকু শহরে।
2. প্রশ্ন: কতজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে?
উত্তর: অন্তত ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
3. প্রশ্ন: কতজন আহত হয়েছেন?
উত্তর: প্রায় ৭৫০ জন আহত হয়েছেন।
4. প্রশ্ন: আহতদের মধ্যে কতজনের অবস্থা গুরুতর?
উত্তর: ৯ জনের অবস্থা গুরুতর।
5. প্রশ্ন: টর্নেডোর গতিবেগ কত ছিল?
উত্তর: প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার।
6. প্রশ্ন: কোন শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত?
উত্তর: রিও বনিতো ডো ইগুয়াকু সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত হয়েছে।
7. প্রশ্ন: শহরের কত শতাংশ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে?
উত্তর: প্রায় ৯০% বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
8. প্রশ্ন: এই শহরে মোট কতজন বাস করেন?
উত্তর: প্রায় ১৪,০০০ মানুষ এই শহরে থাকেন।
9. প্রশ্ন: টর্নেডো কতক্ষণ স্থায়ী হয়েছিল?
উত্তর: খুব অল্প সময় স্থায়ী হলেও ব্যাপক ক্ষতি করেছে।
10. প্রশ্ন: প্রশাসন কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে?
উত্তর: উদ্ধার ও ত্রাণকার্য শুরু করেছে, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
11. প্রশ্ন: নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা কত?
উত্তর: সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি, অনেকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
12. প্রশ্ন: গাড়ি ও ভবনগুলোর কতটা ক্ষতি হয়েছে?
উত্তর: গাড়ি বাতাসে উড়ে গেছে, ভবনের দরজা-জানলা ও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
13. প্রশ্ন: বাসিন্দাদের জন্য আশ্রয় শিবির কি তৈরি হয়েছে?
উত্তর: হ্যাঁ, পার্শ্ববর্তী শহরে অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
14. প্রশ্ন: বাসিন্দারা কবে আবার বাড়িতে ফিরতে পারবেন?
উত্তর: এখনই বলা সম্ভব নয়; পুনর্গঠনে সময় লাগবে।
15. প্রশ্ন: সবচেয়ে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের কী অবস্থা?
উত্তর: বহু মানুষ গৃহহীন হয়েছেন এবং সম্পূর্ণভাবে সর্বস্ব হারিয়েছেন।
#BrazilTornado #NaturalDisaster #BreakingNews

