Jaisalmer Bus Accident: শর্ট সার্কিট থেকে আতশবাজির বিস্ফোরণ, স্বয়ংক্রিয় দরজা বন্ধ হয়ে বাঁচার পথ রুদ্ধ — সামনে এল ভয়াবহ তথ্য
রাজস্থানের যোধপুর(Jodhpur)-জয়সলমের হাইওয়েতে সোমবার ভোরে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ভোর ৩টে নাগাদ কে কে ট্রাভেলসের একটি এসি স্লিপার কোচ বাসে আগুন লাগে, যাতে ঘটনাস্থলেই ২০ জন যাত্রী জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান।
বাসটিতে মোট ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ১৬ জন গুরুতরভাবে দগ্ধ হয়ে যোধপুরের মহাত্মা গান্ধি হাসপাতাল (MGH) ও MDM হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কীভাবে ঘটল আগুন?
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বাসের পিছনের দিকে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত। কিন্তু আগুন মুহূর্তের মধ্যেই ভয়াবহ রূপ নেয় কারণ বাসের ট্রাঙ্কে বেআইনি ভাবে রাখা ছিল আতশবাজি। সেই সঙ্গে এসি সিস্টেমের গ্যাস লিক আগুনকে আরও প্রবল করে তোলে।
মাত্র পাঁচ দিন আগে এই রুটে চলাচল শুরু করেছিল বাসটি। তদন্তে উঠে এসেছে, একটি সাধারণ নন-এসি বাসকে অনুমোদন ছাড়াই এসি স্লিপার কোচে রূপান্তর করা হয়েছিল। ইন্টেরিয়ারে ব্যবহার করা হয় দাহ্য উপকরণ—ফাইবার, মোটা কাপড়, সিলিং প্যানেল ইত্যাদি। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পুরো কোচে।
কেন বেরতে পারলেন না যাত্রীরা?
দুর্ঘটনার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক—বাসের স্বয়ংক্রিয় দরজা। এটি ছিল যাত্রীদের একমাত্র বেরনোর রাস্তা।
আগুনের তাপে বাসের ইলেকট্রিক সার্কিট পুড়ে যায়, ফলে দরজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘লক’ হয়ে যায়। যাত্রীরা তখন ভিতরে বন্দি হয়ে পড়েন। কেউ কেউ জানলা ভেঙে বেরনোর চেষ্টা করলেও অধিকাংশই প্রাণ হারান আগুনের লেলিহান শিখায়।
খবর
Toto Registration: অনলাইনে কীভাবে টোটোর রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করবেন? জানুন সম্পূর্ণ পদ্ধতি
স্থানীয়দের বক্তব্য, হঠাৎ একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, তারপর পুরো বাস আগুনে জ্বলে ওঠে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন গ্রাস করে পুরো গাড়িটিকে।
গুরুতর প্রশ্নের মুখে প্রশাসন
এই দুর্ঘটনা সামনে এনে দিয়েছে একাধিক গুরুতর অবহেলার দৃষ্টান্ত—
অবৈধ পরিবর্তন: কোনও অনুমোদন ছাড়াই সাধারণ বাসকে এসি স্লিপার কোচে পরিণত করা হয়েছিল।
বিপজ্জনক পণ্য পরিবহন: বাসের ট্রাঙ্কে আতশবাজির মতো দাহ্য বস্তু কীভাবে রাখা হল?
নিরাপত্তা মানদণ্ডের অভাব: বাসে কোনও এমারজেন্সি এক্সিট ছিল না, শুধুমাত্র একটি স্বয়ংক্রিয় দরজা।
প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া
রাজস্থান পরিবহন দপ্তর ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কে কে ট্রাভেলসের মালিক ও ড্রাইভারের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত হত্যার মামলা দায়ের হয়েছে। তবে নিহতদের পরিবারের ক্ষতিপূরণ ও দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সর্বস্তরে।
উপসংহার
এই দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করল — লাভের আশায় নিরাপত্তাকে অবহেলা করলে তার মাশুল হয় প্রাণহানি।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিদিন শত শত স্লিপার কোচ চলাচল করে, যেগুলির মধ্যে অনেকগুলিই এখনো সুরক্ষা মানদণ্ডে ঘাটতি পূর্ণ।
প্রশাসন ও পরিবহন দপ্তর যদি এখনই কড়া ব্যবস্থা না নেয়, তবে এমন “চলন্ত কফিন”-এর সংখ্যা কেবল বাড়তেই থাকবে।