শাস্ত্রমতে সঠিকভাবে হনুমানজি পুজোর নিয়ম ও উপকারিতা

হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী হনুমানজি শক্তি, সাহস, নিষ্ঠা ও ভক্তির প্রতীক। তিনি মঙ্গল গ্রহের অধিদেবতা বলে পরিচিত, তাই জন্মছকে মঙ্গলের দোষ থাকলে তাঁর আরাধনা বিশেষ ফলদায়ক। মঙ্গলবার তাঁর পুজোর জন্য সবচেয়ে শুভ দিন হলেও শনিবার আরাধনা করলে শনিদোষ কাটে বলে বিশ্বাস রয়েছে। তবে দেবতার পুজো শাস্ত্রসম্মতভাবে না করলে উপকার মেলে না। তাই বাড়িতে মূর্তি প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে নিত্যপুজো—সবক্ষেত্রেই কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মানা জরুরি।

শুদ্ধভাবে পুজোর প্রস্তুতি
হনুমানজির পুজো শুরু করার আগে বাহ্যিক ও মানসিক—দুই ধরনের শুদ্ধিকরণ অপরিহার্য। সকালে স্নান সেরে পরিষ্কার পোশাক পরে মনকে শান্ত রেখে পুজো করা উচিত। শাস্ত্রমতে ভক্তের মন-পবিত্রতা দেবতার সন্তুষ্টির অন্যতম শর্ত।

মূর্তি প্রতিষ্ঠার নিয়ম
বাড়িতে পবনপুত্রের মূর্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত একটি পরিষ্কার কাচের পাটাতনের উপর মূর্তি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। কাঠের পাটাতনও ব্যবহার করা যায়, তবে উভয়ই যেন ধুলোবালি ও অশুচি থেকে মুক্ত থাকে। মূর্তি স্থাপনের দিক, অবস্থান ইত্যাদি স্থানীয় পুরোহিতের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করা উত্তম।

নৈবেদ্য ও অর্পণসমূহ
হনুমানজির প্রিয় ভোগ হিসেবে কমলা রঙের লাড্ডুর খ্যাতি সর্বজনবিদিত। তাই নৈবেদ্য দেওয়ার সময় এই লাড্ডু অবশ্যই দিলে ভক্তের মনোস্কামনা পূরণ হয় বলে বিশ্বাস। তার পাশাপাশি নিরামিষ খাদ্য, ফলমূল বা ছোলাও অর্পণ করা যায়। নৈবেদ্যের উপর তুলসীপাতা রাখা শুভ। দেবতার পায়ের কাছে তুলসীপাতা, সিঁদুর ও ফুল দেওয়া হয়। অনেক ভক্ত লাল রঙের পতাকাও হনুমানজির হাতে অর্পণ করেন, যা শক্তি ও ভক্তির প্রতীক।

প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম
নৈবেদ্য প্রদানের পর প্রদীপ জ্বালানো হয়। সম্ভব হলে ঘিয়ের প্রদীপ ব্যবহার করাই সর্বোত্তম। না হলে সর্ষের তেলের প্রদীপও গ্রহণযোগ্য। প্রদীপ জ্বালানোর সময় মন শান্ত রাখা এবং দেবতার প্রতি অখণ্ড ভক্তি স্থাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন
উৎসব-পরবর্তী ত্বক ক্লান্ত? সঠিক যত্নে ফিরে পান আগের জেল্লা

হনুমান চালিশা পাঠ
পুজোর শেষ পর্যায়ে ভক্ত আসনে বসে হাঁটু মুড়ে হনুমান চালিশা পাঠ করেন। পাঠের সময় মনঃসংযোগ রাখা প্রয়োজন, অন্য কোনও ভাবনা চলবে না। শাস্ত্রমতে চালিশা পাঠের সময় জিভে একটি তুলসীপাতা রাখা অত্যন্ত পবিত্র বলে ধরা হয়। পাঠ শেষে জোড়হাতে পবনপুত্রের কাছে ইচ্ছা পেশ করা এবং শেষে রাম নাম জপ করলে পুজো সম্পূর্ণ হয়।

আরও পড়ুন
হাসির ধরনে লুকিয়ে থাকা চরিত্র: জ্যোতিষশাস্ত্র বলছে কী

সুফল ও আধ্যাত্মিক উপকার
শাস্ত্র ও লোকবিশ্বাস অনুযায়ী সঠিকভাবে হনুমানজির পুজো করলে জীবনে সাহস, স্থিরতা, মানসিক শক্তি ও বিপদমুক্তির আশীর্বাদ লাভ হয়। মঙ্গলদোষ ও শনিদোষ কমে, এবং কর্মফলও শুভদিকে প্রবাহিত হয় বলে মনে করা হয়। ভক্তি, নিষ্ঠা ও শুদ্ধ মনই হনুমান আরাধনার প্রকৃত ভিত্তি।

আরও পড়ুন
অব্যবহার্য জিনিসে আটকে থাকতে পারে ভাগ্য: বাস্তুশাস্ত্রের পরামর্শ

শুধু হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয় না, জোয়ান খেলে শরীরের অনেক সমস্যা নিবারণ হয় মুখরোচক বাদাম চিক্কি খেতে দারুন, বাড়িতেই তৈরী হবে, জানুন রেসিপি এইভাবে তেজপাতা পোড়ালে দুশ্চিন্তা কেটে যাবে 5 Best Night Creams ৪ মাসের শিশু ২৪০ কোটির মালিক