প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প আবার চালু হতে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে দীর্ঘ টানাপোড়েনের অবসান ঘটিয়ে ফের কর্মসূচি শুরু করতে চলেছে নবান্ন। ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করেছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও দিন থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্প পুনরায় চালু হতে পারে।
রাজ্যে বর্তমানে ২ কোটি ৫৬ লক্ষের বেশি জব কার্ড হোল্ডার রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশের আধার লিঙ্ক থাকলেও ই-কেওয়াইসি আপলোড করতে গিয়ে প্রায় সব জেলাতেই প্রযুক্তিগত সমস্যার মুখে পড়ছেন আধিকারিকরা। সার্ভার বারবার ডাউন হয়ে যাওয়ায় জেলায় জেলায় কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তবে প্রশাসনের আশ্বাস— এটি সাময়িক সমস্যা, দ্রুতই সব তথ্য আপডেট হয়ে যাবে।
২০২১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় অর্থপ্রবাহ বন্ধ করে দেয় কেন্দ্র। অভিযোগ অস্বীকার করে রাজ্য আদালতের দ্বারস্থ হয়। ১৮ জুন কলকাতা হাইকোর্ট জানায়— কোনও কর্মসূচি অনির্দিষ্টকাল বন্ধ রাখা যায় না, তাই শর্তসাপেক্ষে প্রকল্প চালু করতেই হবে। এই রায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে গেলেও সর্বোচ্চ আদালত ২৭ অক্টোবর হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে।
এই রায়ের রাজনৈতিক অভিঘাতও গভীর। তৃণমূল দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি অভিযান থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্দোলনে ১০০ দিনের কাজই ছিল মূল ইস্যু। রায় ঘোষণার পর তৃণমূল এটিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ন্যায়সংগ্রামের জয়’ বলে দাবি করছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্কে এটি তৃণমূলের বড় অস্ত্র হতে পারে।
সব মিলিয়ে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আবার সক্রিয় হচ্ছে রাজ্যের গ্রামীণ কর্মপরিকল্পনা। নবান্নের লক্ষ্য— যত দ্রুত সম্ভব শ্রমিকদের হাতে পৌঁছে দেওয়া তাঁদের ন্যায্য মজুরি, এবং নিষ্ক্রিয় গ্রামের মাঠে ফের কর্মচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনা।
আরও পড়ুন
সদ্যোজাত যমজ সন্তানকে কোলে নিয়ে হাপুস নয়নে কাঁদছেন এক তরুণী, কারন জানলে চমকে যাবেন
FAQ
1. প্রশ্ন: ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প কী?
উত্তর: এটি কেন্দ্রের এমজিএনআরইজিএ কর্মসূচি, যেখানে গ্রামীণ শ্রমিকদের বছরে ১০০ দিনের মজুরিভিত্তিক কাজ দেওয়া হয়।
2. প্রশ্ন: প্রকল্পটি কেন বন্ধ ছিল?
উত্তর: কেন্দ্র ২০২১ সাল থেকে অনিয়মের অভিযোগে অর্থপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়।
3. প্রশ্ন: আবার কেন প্রকল্প চালু হচ্ছে?
উত্তর: সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে প্রকল্প চালুর নির্দেশ দিয়েছে।
4. প্রশ্ন: সুপ্রিম কোর্ট কবে রায় দিয়েছে?
উত্তর: ২৭ অক্টোবর।
5. প্রশ্ন: হাইকোর্টের রায় কী ছিল?
উত্তর: কোনও প্রকল্প অনির্দিষ্টকাল বন্ধ রাখা যাবে না— তাই প্রকল্প চালু করা জরুরি।
6. প্রশ্ন: রাজ্যে কতজন জব কার্ড হোল্ডার আছেন?
উত্তর: প্রায় ২ কোটি ৫৬ লক্ষের বেশি।
7. প্রশ্ন: ই-কেওয়াইসির সমস্যা কী?
উত্তর: সার্ভার ডাউন হওয়ায় আপলোডে দেরি হচ্ছে।
8. প্রশ্ন: কেওয়াইসি কখন শেষ করার নির্দেশ ছিল?
উত্তর: কেন্দ্র ৩১ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে বলেছিল।
9. প্রশ্ন: কাজ শুরু হতে আর কতদিন লাগবে?
উত্তর: প্রশাসন জানিয়েছে— খুব শিগগিরই যেকোনও দিন শুরু হতে পারে।
10. প্রশ্ন: কোন দফতর এই প্রকল্প দেখভাল করে?
উত্তর: পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর।
11. প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় আপিল কেন খারিজ হলো?
উত্তর: সুপ্রিম কোর্ট মনে করেছে হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।
12. প্রশ্ন: শ্রমিকদের কী লাভ হবে?
উত্তর: তাঁরা আবার নিয়মিত মজুরিভিত্তিক কাজ পাবেন।
13. প্রশ্ন: রাজনৈতিকভাবে কার লাভ?
উত্তর: বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনের আগে এটি তৃণমূলের পক্ষে যাবে।
14. প্রশ্ন: তৃণমূল কী বলছে?
উত্তর: এটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ন্যায়সংগ্রামের জয়’।
15. প্রশ্ন: বিজেপির প্রতিক্রিয়া কী?
উত্তর: কেন্দ্র এখনও অনিয়মের অভিযোগে অটল।
16. প্রশ্ন: টাস্কফোর্স কেন গঠন করা হয়েছে?
উত্তর: প্রকল্প দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে চালু করার জন্য।
17. প্রশ্ন: এই প্রকল্পে কারা কাজ করতে পারেন?
উত্তর: গ্রামীণ অঞ্চলের জব কার্ডধারী শ্রমিকরা।
18. প্রশ্ন: জব কার্ড কীভাবে পাওয়া যায়?
উত্তর: স্থানীয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে আবেদন করে।
19. প্রশ্ন: মজুরি কত?
উত্তর: কেন্দ্রীয় হারে রাজ্য অনুযায়ী নির্ধারিত মজুরি দেওয়া হয়।
20. প্রশ্ন: কাজের ধরন কী?
উত্তর: খাল খনন, রাস্তা সংস্কার, জলাধার নির্মাণসহ গ্রামীণ উন্নয়নমূলক কাজ।
21. প্রশ্ন: কাজ পুনরায় না হলে কী হতো?
উত্তর: লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত থাকতেন।
22. প্রশ্ন: কেওয়াইসি কেন বাধ্যতামূলক?
উত্তর: ভুয়ো কার্ড রোধ ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে।
23. প্রশ্ন: সার্ভার সমস্যার সমাধান কীভাবে হবে?
উত্তর: ধাপে ধাপে আপলোড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
24. প্রশ্ন: জেলা প্রশাসন কী ভূমিকা নিচ্ছে?
উত্তর: তথ্য যাচাই, কার্ড আপডেট ও মাঠপর্যায়ের সমন্বয় করছে।
25. প্রশ্ন: কে আদালতে গিয়েছিল?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
26. প্রশ্ন: আন্দোলনের বিষয়টি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: তৃণমূল কেন্দ্রকে বঞ্চনার রাজনীতির অভিযোগে ঘিরে রেখেছিল।
27. প্রশ্ন: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা কী ছিল?
উত্তর: ২০২৩ সালে দিল্লিতে বিশাল বিক্ষোভ পরিচালনা করেন।
28. প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় সরকার কী বলছে?
উত্তর: অনিয়ম প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণ অর্থপ্রবাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে অটল।
29. প্রশ্ন: রাজ্য কী বলছে?
উত্তর: সব তথ্য সময় মতো জমা দেওয়া হয়েছে, অন্যায়ভাবে অর্থ বন্ধ ছিল।
30. প্রশ্ন: আদালতের নির্দেশ কতটা বাধ্যতামূলক?
উত্তর: সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ— তাই অবিলম্বে মানতে হবে।
31. প্রশ্ন: কাজ শুরু হলে প্রথমে কী করা হবে?
উত্তর: জব কার্ড যাচাই ও তথ্য আপডেট সম্পূর্ণ করা।
32. প্রশ্ন: শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি কী হবে?
উত্তর: আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী ধাপে বকেয়া মজুরি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
33. প্রশ্ন: প্রকল্প বন্ধে কাদের ক্ষতি হয়েছে?
উত্তর: গ্রামীণ শ্রমিক, পরিবার এবং স্থানীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
34. প্রশ্ন: প্রকল্প চালু হলে রাজ্যের আর্থিক বোঝা কী?
উত্তর: বেশিরভাগ ব্যয় কেন্দ্র বহন করলেও কিছু অংশ রাজ্যের।
35. প্রশ্ন: তদারকি কীভাবে হবে?
উত্তর: টাস্কফোর্স ও জেলা পর্যায়ের মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।
36. প্রশ্ন: কার্ড বাতিলের সম্ভাবনা আছে কি?
উত্তর: যেসব কার্ডে অসঙ্গতি বা ভুয়ো তথ্য পাওয়া যাবে— সেগুলো বাতিল হতে পারে।
37. প্রশ্ন: গ্রামের ভোটে এর প্রভাব কী?
উত্তর: রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূল এর বড় লাভ পেতে পারে।
38. প্রশ্ন: প্রকল্পটি কবে শুরু হয়েছিল?
উত্তর: ২০০৫ সালে এমজিএনআরইজিএ চালু হয়।
39. প্রশ্ন: আদালতের রায়ে নতুন কী বার্তা আছে?
উত্তর: কল্যাণমূলক কর্মসূচি অনির্দিষ্টকাল বন্ধ রাখা যায় না।
40. প্রশ্ন: সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা কী?
উত্তর: দ্রুত কাজ শুরু ও দ্রুত মজুরি পাওয়ার আশা।