গত সোমবার থেকে কলকাতা শহরে চালু হয়ে গিয়েছে জুড়ে যাওয়া মেট্রো পরিষেবা। আর এই পরিষেবায় গোটা কলকাতা শহরকে মেট্রো রুটের মাধ্যমে মুড়ে ফেলা হয়েছে। আর এরফলে দক্ষিণ কলকাতা থেকে উত্তর কলকাতায় আসা এখন কয়েক মিনিটের ব্যবধান। অপরদিকে হাওড়া থেকে শিয়ালদহ আসাও মেরেকেটে ৯ মিনিটের রাস্তা। সাধারণ মানুষ এর ফলে বিশাল উপকৃত হলেও এবার শহরের নস্টালজিয়া হারাতে বসেছে। অ্যাপ ক্যাব আসার পর ধাক্কা খেয়েছিল ব্যবসায়। এবার মেট্রো পরিষেবার নতুন দিগন্ত খুলে যাওয়ায় হলুদ ট্যাক্সির বাজার এখন সংকটে।
কলকাতার নস্টালজিয়া যা দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে শহরের মানুষের পরিবহন ব্যবস্থার এক অন্যতম অঙ্গ ছিল। কিন্তু সময় বদলেছে। বদলে গিয়েছে মানুষের চাহিদা। এখন আর যাত্রীরা গরমের মধ্যে ভাঙা জানালা, এসিহীন ট্যাক্সি, মিটারে না যাওয়া, ছেঁড়া সিটের লজঝড়ে ট্যাক্সির প্রতি আর আকৃষ্ট হন না। এর আগে মেট্রো পরিষেবায় যাতায়াত ব্যবস্থার বর্তমানের মত সুবিধা না থাকায় অনেকেই মানিয়ে নিতেন হলুদ ট্যাক্সির যাত্রাকে। তবে এখন আর নয়। মেট্রোর নতুন পরিষেবা সঙ্গে এসির হাওয়া ও কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার মতন সুবিধা থাকায় মানুষ আরও বেশি করে মেট্রোর প্রতি ঝুঁকছেন।
আর এরফলে কালো মেঘ দেখছেন ট্যাক্সি চালকেরা। বর্তমানে এখন ভরসা বলতে অধিক রাত্রের দূরপাল্লার ট্রেন। কিন্তু তাতে আর কত যাত্রী ওঠেন। সারাদিনের খরচ তা দিয়ে মেটানো মুশকিল। আর তার ফলে স্বভাবতই কপালে চিন্তার ভাঁজ ট্যাক্সিচালকদের। এদিকে কলকাতার নস্টালজিয়া, আবেগ, অনুভূতি এই হলুদ ট্যাক্সি এখন মাছি তাড়াতে বসেছে। রোজগার কমে যাওয়ায় এখন ট্যাক্সির অস্তিত্ব সংকটে। কেউ কেউ ট্যাক্সি চালানো ছেড়ে অন্য কাজে যোগ দিয়েছেন।
এর পাশাপাশি ১৫ বছরের গেরোতে অনেক ট্যাক্সি বসে গিয়েছে। এখন মেরেকেটে ৪ হাজার ট্যাক্সি রাস্তায় বেরোয়। আগে তেল ভরে ও মালিককে টাকা দিয়ে ৪-৫০০ টাকা থাকতো। কিন্তু এখন সেটিও উঠছে না বলে জানিয়েছেন তারা। ১৫ বছর হয়ে যাওয়ায় চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে আরও হাজার দেড়েক ট্যাক্সি বসে যাবে। এবার তাই বিকল্প পথ খুঁজতে মরিয়া চালকেরা।