স্বাস্থ্যসচেতনদের কাছে নতুন ট্রেন্ড হয়ে উঠছে ঢেঁড়স ডিটক্স ওয়াটার। সাম্প্রতিক এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস ঢেঁড়স ভিজানো জলের সঙ্গে এক টেবিলচামচ লেবুর রস মিশিয়ে অন্তত এক মাস পান করলে শরীর পেতে পারে একাধিক উপকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢেঁড়সে থাকা পলিফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েড ও আঁশ শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে।
অবসাদ কমিয়ে শক্তি ফিরিয়ে আনে
ঢেঁড়সের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সক্ষম। এর ফলে ক্লান্তি দূরে থাকে, সহনশক্তি বাড়ে এবং শরীর দ্রুত শক্তি ফিরে পায়। তাই সকাল শুরু করতে অনেকেই ঢেঁড়স ভিজানো জলকে বেছে নিচ্ছেন।
কিডনিকে সুরক্ষায় সম্ভাব্য ভূমিকা
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ঢেঁড়সের নির্যাস কিডনির কোষকে রক্ষা করতে পারে। এটি কিডনির ইনফ্লেমেশন কমাতে সাহায্য করে ও শরীরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এনজাইম সক্রিয় রাখে। নিয়মিত গ্রহণে কিডনির উপর চাপ কিছুটা কমে যেতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে
ঢেঁড়সে থাকা বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ শরীরের দীর্ঘস্থায়ী হালকা প্রদাহ কমাতে সহায়ক হতে পারে। এর সঙ্গে লেবুর রসে থাকা ভিটামিন–সি প্রদাহরোধী প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
হৃদ্স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে
ঢেঁড়সের আঁশ রক্তের ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ বা LDL কমাতে ভূমিকা নিতে পারে। নিয়মিত পান করলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমার সম্ভাবনা থাকে। এ কারণে কার্ডিয়াক কেয়ার রুটিনে অনেকে ঢেঁড়স জলকে যুক্ত করছেন।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
ঢেঁড়সের ‘মিউসিলেজ’ বা লেসযুক্ত আঁশ কার্বোহাইড্রেট শোষণের গতি কমিয়ে রক্তে গ্লুকোজের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ডায়াবেটিস থাকা অনেকে এটি উপকারী মনে করেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি কখনওই ওষুধের বিকল্প নয়, তা অবশ্যই মনে রাখতে হবে।
লিভার সুস্থ রাখতে পারে ঢেঁড়স জল
ঢেঁড়সের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট লিভারের উপর চাপ কমিয়ে ডিটক্স প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে। লিভার ভালো থাকলে হজম থেকে মেটাবলিজম—শরীরের সব প্রক্রিয়াই আরও নিয়ন্ত্রিতভাবে কাজ করে।
ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে
ঢেঁড়স ভিটামিন A, C, K–সহ বিভিন্ন খনিজে সমৃদ্ধ। এগুলো শরীরের কোষকে সুরক্ষা দেয় ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। লেবুর রস যুক্ত হলে ইমিউন সিস্টেম আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
শেষ কথা
ঢেঁড়স ডিটক্স জল এখন জনপ্রিয় হলেও এটি কোনো ‘জাদুর পানীয়’ নয়। তবে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সুষম খাদ্যের সঙ্গে যদি যোগ করা যায়, তবে শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে এটি সহায়ক হতে পারে।
