সিলিগুড়ি থেকে — বলি উর্ধ্বমহলে এক যুগান্তকারী অভিনেতা ছেড়ে চলে গেলেন চুপিচুপি। সোমবার সকালেই ধর্মেন্দ্রকে অ্যাম্বুল্যান্সে দ্রুত তাঁর বাড়ি থেকে শ্মশানে নেওয়া হয় এবং সেখানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়ায় সাধারণ অনুরাগীদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য, যা ভক্তদের মধ্যে গভীর হতাশা ও ক্ষোভের স্রোত জাগিয়েছে।
ঘটনার শুরু হয় ধর্মেন্দ্রের বাড়ির বাইরে একটি অপ্রত্যাশিত অ্যাম্বুল্যান্স এসে পৌঁছানোর পর। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, হয়তো তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। কিন্তু জনমনের উত্তেজনা বাড়ার আগেই তাঁকে সরাসরি শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। গার্ডেন-লেট আস্থা নেই যে, এমন বড় তারকার শেষ যাত্রায় বড় পরিসরে শ্রদ্ধা জানানো হতো — কিন্তু পারিবারিক সিদ্ধান্ত ছিল দ্রুত এবং সীমিত উপস্থিতিতে শেষক্রিয়া সম্পন্ন করার।
ধর্মেন্দ্রের স্বজন ও পরিবারের ঘনিষ্ট সদস্যদের বাইরে শোকপ্রকাশ করার জন্য বিশাল ভিড় হয়নি। এতেই অনুরাগীদের মধ্যে প্রশ্ন: “পরিবার কি সেগুলো সবাই দেখতে আসার অপেক্ষায় ছিল না?” অনেক ভক্ত মনে করছেন, পুরো প্রক্রিয়াটি গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ তাদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
একজন অনুরাগী বলে, “এত বড় তারকার अंत্যেষ্টিক্রিয়া এত দ্রুত ও গোপনে করা — এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক।” অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, “তাঁর জীবনের প্রতি শ্রদ্ধার শেষও যেন হিসাব-নিকাশে শেষ হয়েছে।” অনেক ভক্তেই অভিমানে বুক ভরেছে, কারণ তাঁরা বিশ্বাস করতেন যে, ধর্মেন্দ্রের প্রতি তাঁদের ভালোবাসা — শেষ বিদায়ে প্রকাশ পাবে, কিন্তু সে সুযোগই তাঁদের হাতেড়া থেকে হারিয়ে গেছে।
শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন ধর্মেন্দ্রের ঘনিষ্ঠ পরিবার: মেয়ে ঈশা দেওল ও তাঁর সঙ্গীরা, সানি দেওল, বর্ষীয়ান ছবি তারকারা এবং কিছু মাত্রই অভিজাত অতিথি। পরিজনরা দ্রুত শেষকৃত্য সম্পন্ন করে ভক্তদের জন্য বিশেষ কোনো আনুষ্ঠানিক সমাবেশ বা শ্রদ্ধাসভা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
ভক্তদের এই ক্ষোভ শুধু গোপন ছিল শেষযাত্রায় না আনার জন্য নয়; বরং তারা মনে করছেন, ধর্মেন্দ্র তাঁর সাহসী অভিনয়, কমিক সময় ও সামাজিক প্রভাব দিয়ে পুরো দেশকে আনন্দ দিয়েছিলেন — তাই তাঁর বিদায়ও সেভাবে উজ্জ্বল ও সর্বজনীন হওয়া উচিত ছিল। তাদের দাবি, চান্ডার গ্র্যান্ড তারকার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা প্রদানে অন্তত একটি বড়, সবার জন্য উন্মুক্ত শ্রদ্ধাসভা আয়োজন করা যেত, যাতে তাঁর ভক্তরা শেষবার তাঁকে সম্মান জানাতে পারে।
আরও পড়ুন
ধর্মেন্দ্রের মৃত্যুর প্রভাব রাম চরণ ও জাহ্নবীর কাজের উপর! শোকে স্তব্ধ বলিউড
এই গোপন সিদ্ধান্ত ও সীমিত উপস্থিতির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ব্যবস্থা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে। অনেকেই বলছেন, “এত জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী একজন তারকার বিদায় এত সাধারণভাবে করা হল কেন?” কিছু অনুরাগী তরে লিখেছেন, “এটা আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতি অবজ্ঞা।” আবার অনেকে মন্তব্য করেছেন, “পরিবার হয়তো নিজেদের জন্য প্রাইভেসি চেয়েছিল, কিন্তু ভক্তদের অনুভূতির কথাও তো মাথায় রাখা উচিত ছিল।”
আরও পড়ুন
অসুস্থতার আগে সমাজমাধ্যমে শেষ পোস্টে কোন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ধর্মেন্দ্র?
এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো তাঁরা কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে সঙ্কোচ প্রকাশ করেছেন। ধর্মেন্দ্রের মেয়ের তরফে, “পারিবারিক সিদ্ধান্ত ছিল দ্রুত কাজ করা এবং গোপনভাবে এই শেষ যাত্রা সম্পাদন করা।” কিন্তু অনুরাগীদের মন শান্ত হচ্ছে না — তারা বলছেন, তাঁদের বোঝা দরকার ছিল, বলা দরকার ছিল কিছুর পরিকল্পনা তাঁরা খুলে দিতেন, যাতে তাঁর স্মৃতিকে ভালোভাবে সম্মান জানানো যেত।
আরও পড়ুন
হেমাকে বিয়ের পর ২৬ বছরের ছোট অভিনেত্রীর প্রেমে ধর্মেন্দ্র! কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রী?
বর্তমানে অনুরাগীদের সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হয়ে একটি ভার্চুয়াল ট্রিবিউট চলছে। তারা পোস্ট করছে পুরনো ছবির স্মৃতি, তাঁর বিখ্যাত সংলাপ, এবং শেষ বিদায়ের জন্য একটি ডিজিটাল ফোরাম গড়ে তুলেছে। অনেকেই এখনো বিশ্বাস করছেন, ধর্মেন্দ্রের উত্তরাধিকার শুধু তাঁর কাজেই নয়, তাঁর প্রতি ভক্তদের ভালোবাসায় — এবং সেই ভালোবাসা শুধুমাত্র গোপনে শেষযাত্রায় চুপ হয়ে শেষ হয়ে যেতে পারবে না।
আরও পড়ুন
‘আমার চোখের সামনেই পরিণতি পেল ধর্মেন্দ্র-হেমার প্রেম’: বন্ধু বিশুর স্মৃতিচারণে ঢেউ তুলল শোক
ভক্তদের দাবি স্পষ্ট: “আপনাদের সিদ্ধান্ত আইনসিদ্ধ হলেও, ব্যাজবিহীন জায়গায় তাঁর বিদায় যেন শুধু স্বজনদের নয়, সমগ্র দেশীয় ভক্তদেরও”— এবং এই ক্ষোভ ও আহ্বান ভবিষ্যতে বলি তারকারা বা তার পরিবারগুলোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে: একটি তারকার জীবনের শেষ অধ্যায় কখন ‘গোপন’ এবং কখন ‘সবার জন্য’ হওয়া উচিত?
