‘যত খাচ্ছেন, তত পুষ্টি কি পাচ্ছেন?’— শরীরের ছোট ছোট লক্ষণেই ধরা পড়ে ভিটামিন-খনিজের ঘাটতি

প্রতিদিন পছন্দের খাবার খেয়েও শরীর ঠিকঠাক শক্তি পাচ্ছে না—এমন অভিজ্ঞতা অনেকেরই। ডায়েট করে ওজন কমানোর চেষ্টা করেও ফল না পাওয়া, সারাদিন ক্লান্তি ও ঝিমুনি লেগে থাকা, সাধারণ কাজেও শক্তির অভাব—এসবই ইঙ্গিত দেয় শরীরে পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। শুধু বেশি খাওয়া নয়, নিয়মিত সঠিক খাবার নির্বাচন করাই নির্ধারণ করে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ যথেষ্ট পাচ্ছে কি না। খুব সাধারণ কিছু লক্ষণই বলে দেয় শরীরে কোন পুষ্টির ঘাটতি কাজ করছে।

নখ ভেঙে যাওয়া—প্রোটিন ও আয়রনের ঘাটতির ইঙ্গিত
যত্ন করেও যদি নখ সহজে ভেঙে যায় বা নখের রং ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে, তবে তা প্রোটিন ও আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে, আর প্রোটিন নখ-চুল-ত্বকের গঠন মজবুত রাখে। তাই নিয়মিত ডিম, মাছ, চর্বিহীন মাংস ও সবুজ শাকসব্জি খেলে এই ঘাটতি পূরণ হবে।

চোখের পাতা কাঁপা বা পেশিতে টান—ম্যাগনেশিয়ামের অভাব
হঠাৎ চোখের পাতা কাঁপা, হাত-পায়ের পেশিতে টান ধরা—অনেকে ভাবেন কাজের চাপ বা দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে এমন হয়। কিন্তু শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের অভাব থাকলেও ঠিক একই উপসর্গ দেখা দেয়। ম্যাগনেশিয়াম স্নায়ু ও পেশির স্বাভাবিক কার্যকারিতা বজায় রাখে। এই ঘাটতি পূরণে বাদাম, বীজ, কলা, ওটস, ডালিয়া ইত্যাদি খাবার উপকারী।

হাড়ে ‘কটকট’ শব্দ বা গাঁটে ব্যথা—ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়ামের অভাব
উঠতে-বসতে গেলে হাড়ে কটকট শব্দ পাওয়া বা সন্ধিবন্ধে ব্যথা বৃদ্ধি—এগুলো ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়ামের ঘাটতির স্পষ্ট লক্ষণ। ভিটামিন ডি না থাকলে শরীর ক্যালশিয়াম সঠিকভাবে শোষণ করতে পারে না, ফলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। রোদ লাগানো, দুধ-দইসহ দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া এই ঘাটতি পূরণে সহায়ক। দুধে অ্যালার্জি থাকলে সয় মিল্ক বা বাদামের দুধ ভালো বিকল্প।

বয়সের আগেই চুল পাকা—ভিটামিন বি১২ ও জিঙ্কের অভাব
অনেকেই কম বয়সেই চুল পাকাকে জেনেটিক সমস্যা ভাবেন। অথচ ভিটামিন বি১২ ও জিঙ্কের ঘাটতি থাকলেও চুল অকালেই পেকে যেতে পারে। বি১২ রক্তে অক্সিজেন পরিবহন করে এবং চুলের গোড়ায় মেলানিনের ভারসাম্য ঠিক রাখে। দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, মাছ ও বিভিন্ন বাদাম নিয়মিত খেলে এ অভাব দূর হয়।

আরও পড়ুন
অব্যবহার্য জিনিসে আটকে থাকতে পারে ভাগ্য: বাস্তুশাস্ত্রের পরামর্শ

সামান্য কেটে গেলেও রক্ত বন্ধ না হওয়া—ভিটামিন সি ও কে১-এর অভাব
ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া, সামান্য আঘাতেই রক্তক্ষরণ থামতে দেরি হওয়া—এসব ভিটামিন সি ও কে১-ঘাটতির লক্ষণ। ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরি করে ত্বককে মজবুত রাখে, আর ভিটামিন কে১ রক্ত জমাট বাঁধায় সাহায্য করে। তাই লেবু, কমলা, পেয়ারা, আঙুরসহ বিভিন্ন ফল ও সবুজ শাকসবজি খেতে হবে।

আরও পড়ুন
শাস্ত্রমতে সঠিকভাবে হনুমানজি পুজোর নিয়ম ও উপকারিতা

শেষ কথা
শরীর কখনও অকারণে সংকেত দেয় না। ছোট ছোট লক্ষণকে গুরুত্ব দিলে সহজেই জানা যায় কোন ভিটামিন বা খনিজের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও প্রয়োজন অনুযায়ী পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করলে শরীর দ্রুতই ভারসাম্যে ফিরে আসবে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে তাই খাওয়া-দাওয়ার মান ও বৈচিত্র্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন
‘এত জলঘোলা… ভাবছি দূরে কোথাও!’ চিরদিনই ছাড়ার পর এখন কী পরিকল্পনা দিতিপ্রিয়ার?

শুধু হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয় না, জোয়ান খেলে শরীরের অনেক সমস্যা নিবারণ হয় মুখরোচক বাদাম চিক্কি খেতে দারুন, বাড়িতেই তৈরী হবে, জানুন রেসিপি এইভাবে তেজপাতা পোড়ালে দুশ্চিন্তা কেটে যাবে 5 Best Night Creams ৪ মাসের শিশু ২৪০ কোটির মালিক