দেশের মধ্যবিত্তের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে রেশনের কেরোসিন তেলের দাম বৃদ্ধি করল কেন্দ্রীয় সরকার। আচমকাই ঘোষণা করা এই মূল্যবৃদ্ধিতে রেশন গ্রাহকদের দিতে হবে লিটারপ্রতি সর্বোচ্চ ৪ টাকা বেশি। গত তিন মাসে মোট ৬ টাকার বৃদ্ধি—এমনটাই জানাচ্ছে ডিলার সংগঠন ও খাদ্য দফতর সূত্র।
মুদ্রাস্ফীতির বাজারে নতুন ধাক্কা
দেশজুড়ে যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম লাগামছাড়া, তখন রেশনে কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের কাছে যেন আরও এক ধাক্কা। রান্না, আলো বা ছোটখাটো কাজের জন্য এখনও বহু পরিবার কেরোসিনের উপর নির্ভরশীল। সেই অবস্থায় এই মূল্যবৃদ্ধি তাঁদের সংসার খরচে আরও চাপ বাড়াবে।
অনেক ডিলারের মতে, দাম বাড়ার ফলে বহু মানুষ কেরোসিন তেল কেনার আগ্রহ হারাবেন। চাহিদা কমার আশঙ্কায় উদ্বেগ বাড়ছে ডিলারদের মধ্যেও।
কলকাতায় নতুন দাম কত হবে?
খাদ্য দফতরের খবর অনুযায়ী, কলকাতায় রেশনের কেরোসিন তেলের দাম দাঁড়াতে পারে প্রায় ৬৭ টাকা লিটারপ্রতি। আর রাজ্যের অন্যান্য জেলায় দাম থাকবে ৭০ টাকার মধ্যে।
ডিলার সংগঠনের আশঙ্কা—এই উচ্চমূল্য রেশন গ্রাহকদের আরও দূরে সরিয়ে দেবে কেরোসিন ব্যবহার থেকে।
রাজনৈতিক টানাপোড়েন: কেন্দ্র বনাম রাজ্য
ডিলার সংগঠনের নেতা অশোক গুপ্তের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশে রেশন মারফত কেরোসিন বণ্টন ব্যবস্থা তুলে দিতে চাইছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ এই সিদ্ধান্তে রাজি নয়।
আরও পড়ুন
তারাপীঠ মন্দিরে ‘টাকার খেলা’ বন্ধ, গর্ভগৃহে প্রবেশে নয়া নিয়মে কড়াকড়ি
তিনি দাবি করেন, কলকাতা হাইকোর্টের একটি রায়ের বলেই কেন্দ্র আজও বাংলায় দেশের মধ্যে সর্বাধিক পরিমাণ কেরোসিন সরবরাহ করতে বাধ্য। ফলে কলকাতা ও রাজ্যের কেরোসিন চাহিদা নিতান্তই কমাতে কেন্দ্র এই মূল্যবৃদ্ধিকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে মত বহু ডিলারের।
আরও পড়ুন
‘যত খাচ্ছেন, তত পুষ্টি কি পাচ্ছেন?’— শরীরের ছোট ছোট লক্ষণেই ধরা পড়ে ভিটামিন-খনিজের ঘাটতি
চাহিদা কমার সম্ভাবনা
রেশন ডিলারদের মতে,
দাম বাড়লে গ্রাহকেরা কেরোসিন তেলের ব্যবহার আরও কমিয়ে ফেলবেন
বিক্রি কমবে, ফলে ডিলারদেরও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে
কেরোসিনের উপর নির্ভরশীল নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর উপর বড় আর্থিক প্রভাব পড়বে
আরও পড়ুন
অব্যবহার্য জিনিসে আটকে থাকতে পারে ভাগ্য: বাস্তুশাস্ত্রের পরামর্শ
উপসংহার
রেশনে কেরোসিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি শুধু গ্রাহকই নয়, ডিলার ও সরবরাহ শৃঙ্খলকেও প্রভাবিত করবে। কেন্দ্র–রাজ্যের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেই সাধারণ মানুষের মাথায় পড়ল বাড়তি বোঝা। এখন দেখার, রাজ্য বা কেন্দ্র কোনও বিকল্প ছাড় দেওয়ার পথে এগোয় কি না।