আজকের দিনে মোবাইল ফোন ছাড়া জীবন প্রায় অচল। যোগাযোগ, কাজ, বিনোদন—সব ক্ষেত্রেই মোবাইল আমাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু এই প্রয়োজনীয় বস্তুটিই যখন ধীরে ধীরে মানুষের মন ও সময় নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে, তখনই সমস্যা। বৃন্দাবনের সাধক প্রেমানন্দ মহারাজ মনে করেন, মোবাইল ফোন যেমন উপকারী, তেমনই সমানভাবে ক্ষতিকরও। তাই এর ব্যবহারে আত্মনিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি।
সম্প্রতি এক ভক্ত তাঁর কাছে প্রশ্ন রাখেন—মোবাইল ফোন ঘাঁটাঘাঁটি আর আলস্য কীভাবে দূর করা যায়? উত্তরে প্রেমানন্দ মহারাজ বলেন, এর একমাত্র পথ হলো অনুশীলন। মানুষের শরীর ও মন অভ্যাসের উপরই নির্ভরশীল। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কেউ দিনে ৩৫ বার খেতে পারেন, আবার কেউ অল্প খাবারেই বেঁচে থাকেন। আগে যাঁরা ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমোতেন, অনুশীলনের মাধ্যমে তাঁরাই ৩ ঘণ্টা ঘুমিয়েও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।
মহারাজের মতে, মোবাইলে থাকা সিরিয়াল, সিনেমা ও সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্ট অনেক সময় বাস্তব থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে এমন অগণিত বিষয় রয়েছে যে, সারাদিন দেখলেও তা শেষ হয় না। এই অতিরিক্ত আসক্তিই আলস্যের মূল কারণ।
শীতে গরম কম্বল ছেড়ে ভোরে ওঠা নিয়ে প্রেমানন্দ মহারাজের পরামর্শ অত্যন্ত সহজ কিন্তু কার্যকর। তিনি বলেন, জীবনে কখনও অ্যালার্ম সেট করেননি। ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই প্রথম কাজ হলো কম্বল সরিয়ে দেওয়া। ঘুম না কাটলেও জোর করে উঠে বসতে হবে। জল খেতে হবে। ফ্রেশ না হলেও চলবে, কিন্তু বিছানায় ফিরে যাওয়া যাবে না। তাঁর কথায়, অ্যালার্ম নয়, মানুষের নিজের সংকল্পই তাকে জাগাতে পারে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় যদি দৃঢ়ভাবে সংকল্প করা যায় যে ভোর সাড়ে তিনটেয় উঠবেন, তবে ঈশ্বরের কৃপায় ঠিক সেই সময়েই ঘুম ভেঙে যাবে।
আরও পড়ুন
চতুর্গ্রহী যোগে বিরল গ্রহসংযোগ, খুলছে সৌভাগ্যের দরজা
প্রেমানন্দ মহারাজ আরও বলেন, ঈশ্বর মানুষের আন্তরিক সংকল্প পূরণ করেন। নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে মোবাইল ব্যবহারের সময়ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। চাইলে দিনে আধ ঘণ্টা বা এক ঘণ্টার বেশি মোবাইল ব্যবহার না করার অভ্যাস গড়ে তোলা যায়।
আরও পড়ুন
2026 Star Born Rashifal: এই নক্ষত্রে জন্মানোদের খুলছে ভাগ্যের দরজা, নতুন বছরে সাফল্যের জোয়ার
তিনি বিশেষভাবে সতর্ক করেন, আজকাল অনেক মানুষ গাড়ি চালানোর সময়ও মোবাইল ব্যবহার করেন, যা নিজের এবং অন্যের জীবন বিপন্ন করে। তাই মোবাইলের ভালো দিক গ্রহণ করতে হবে এবং খারাপ দিক বর্জন করতে হবে। আত্মসংযম, সংকল্প ও নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমেই আলস্য কাটিয়ে সুস্থ, সচেতন ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন সম্ভব—এটাই প্রেমানন্দ মহারাজের মূল বার্তা।
আরও পড়ুন
চাণক্য নীতির আলোকে পরকীয়া: কেন স্ত্রী থাকতেও অন্য সম্পর্কে জড়ান স্বামীরা