ওজন কমানোর জন্য অনেকেই কঠোর ডায়েট, নিয়মিত ব্যায়াম, জীবনযাপন পরিবর্তন—সবকিছুই চেষ্টা করে থাকেন। তবুও কারও কারও ক্ষেত্রে ওজন কিছুতেই কমতে চায় না।

চিকিৎসাবিদ্যা এই সমস্যার নানান ব্যাখ্যা দিলেও, জ্যোতিষশাস্ত্র বলছে ভিন্ন কথা। কিছু মানুষের স্থূলতার নেপথ্যে নাকি থাকতে পারে গ্রহের অশুভ প্রভাব। নয়টি গ্রহের প্রত্যেকটিই মানুষের শরীর ও মনের বিভিন্ন দিকের সঙ্গে যুক্ত। সেই গ্রহগুলির অবস্থান শক্তিশালী বা দুর্বল হলে তার প্রভাব জীবনে পড়তে পারে। বিশেষ করে তিনটি গ্রহকে ওজন বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখা হয়—বৃহস্পতি, শুক্র এবং চন্দ্র।
বৃহস্পতির অশুভ প্রভাব
জ্যোতিষ মতে, কারও জন্মকুণ্ডলীতে বৃহস্পতি অশুভ স্থানে থাকলে তার খাদ্যাভ্যাসে অস্থিরতা দেখা দেয়। জাঙ্ক ফুড, তেল-মশলাযুক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। ফলে ওজন খুব দ্রুত বাড়ে এবং কমানো কঠিন হয়ে পড়ে। বৃহস্পতি জীবনে বিলাসিতা ও ভোগ-বিলাসের প্রতীক বলেও ধরা হয়; ফলে অনেকেই খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যায় পড়েন।
প্রতিকার: বৃহস্পতিকে শক্তিশালী করতে প্রতি বৃহস্পতিবার গরীব মানুষকে গুড় ও ছোলা দান করা উপকারী বলে মনে করা হয়।
শুক্রের অশুভ প্রভাব
শুক্র দুর্বল হলে ব্যক্তি মিষ্টি ও সুস্বাদু, বিলাসবহুল খাবারের প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়েন। রসনাবিলাসই হয়ে ওঠে জীবনের প্রধান আকর্ষণ। ফলে আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ খরচ হয় খাবারের পেছনে, আর অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস বাড়িয়ে তোলে ওজন।
প্রতিকার: শুক্রকে শক্তিশালী করতে হালকা রঙের পোশাক পরা, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, শিল্পচর্চায় মন দেওয়া এবং ‘ওম দ্রাম দ্রাম দ্রাম সহ শুক্রায় নমঃ’ মন্ত্র ১০৮ বার জপ করার কথা বলা হয়।
আরও পড়ুন
প্রতিদিন গীতাপাঠের উপকারিতা: মন, মস্তিষ্ক ও জীবনের সমন্বয়ে এক অনন্য সাধনা
চন্দ্রের অশুভ প্রভাব

চন্দ্র মনের গ্রহ। এটি দুর্বল হলে মানুষ সহজেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। দুঃখ, চাপ বা মানসিক অস্থিরতা থেকে ‘ইমোশনাল ইটিং’-এর প্রবণতা তৈরি হতে পারে। আবেগের বশে অতিরিক্ত খাওয়া ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা স্থূলতার দিকে ধাবিত করে।
প্রতিকার: চন্দ্রকে শক্তিশালী করতে রুপোর গয়না পরা, বয়স্কদের সম্মান করা এবং ‘ওম শ্রম শ্রীম শ্রৌম সহ চন্দ্রমাসে নমঃ’ মন্ত্র জপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
৮ ডিসেম্বরের রাশিফল: কার ভাগ্যে সাফল্য, কার জীবনে সতর্কতার বার্তা
শেষকথা
ওজন বৃদ্ধি নানা কারণে হতে পারে—হরমোন, জীবনযাপন, মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, অথবা খাদ্যাভ্যাস। তবে অনেকেই বিশ্বাস করেন, জ্যোতিষশাস্ত্রও একটি ভূমিকা রাখতে পারে। গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব ভরসার জায়গা হোক বা না হোক, খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক শান্তিই সুস্থ জীবনযাপনের আসল চাবিকাঠি।
জ্যোতিষীয় প্রতিকারকে মানলে তা হোক অনুপ্রেরণা—স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখাই শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন
রাহুর মহাদশা সবসময় অশুভ নয়: চার রাশি পান বিশেষ শুভফল