গঙ্গাজল হিন্দুদের ধর্মীয় অনুশ্ঠান, নিত্যপুজো, গৃহকর্ম থেকে শুরু করে জীবনের শুভ মুহূর্তগুলির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বহু মানুষ নিয়মিত গঙ্গার তীর থেকে জল সংগ্রহ করতে পারেন না বলে ঘরে রেখে ব্যবহার করেন। কিন্তু এই পবিত্র জলের মহিমা অটুট রাখতে হলে কীভাবে সংরক্ষণ করা উচিত—তা জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ভুল পদ্ধতিতে রাখলে গঙ্গাজলের শুদ্ধতা ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে বহু শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে।
কোন পাত্রে রাখবেন?
অনেকে সুবিধার কারণে প্লাস্টিকের বোতল বা ড্রামে গঙ্গাজল ভরেন। কিন্তু ধর্মীয় মতে, প্লাস্টিককে অশুদ্ধ বা অযোগ্য ধরা হয়। এতে গঙ্গাজলের পবিত্রতা কমে যায় বলে মনে করা হয়।
তাই গঙ্গাজল রাখার উপযুক্ত পাত্র হল—
*তামার পাত্র
*পিতলের পাত্র
*স্বচ্ছ কাচের বোতল
পাত্রটি ব্যবহারের আগে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকনো ও পরিষ্কার পাত্রেই গঙ্গাজল ভরতে হবে।
কোথায় রাখবেন গঙ্গাজল?
গঙ্গাজলের স্থাপনের স্থান নিয়েও রয়েছে ধর্মীয় নির্দেশ:
*ঠাকুরঘর সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা।
*পাত্র মেঝেতে রাখা যাবে না; উঁচু তাক বা পাটাতনে রাখতে হবে।
*সংরক্ষণের আশপাশের জায়গা যেন স্বচ্ছ, পরিষ্কার ও ধুলোমুক্ত থাকে।
ঢাকনার ব্যবহার
পাত্রটি কখনোই খোলা রাখা উচিত নয়।
*শক্তভাবে বসানো একটি ঢাকনা ব্যবহার করা আবশ্যক।
+অনেকেই ঢাকনার চারপাশে কাপড় বেঁধে রাখেন—এটি আরও নিরাপদ বলে গণ্য হয়।
আরও পড়ুন
শাস্ত্রমতে সঠিকভাবে হনুমানজি পুজোর নিয়ম ও উপকারিতা
পরিষ্কার হাতে স্পর্শ করবেন
গঙ্গাজলের পাত্র স্পর্শ করার আগে হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক।
*খাবার খাওয়ার পরে বা অপরিষ্কার হাতে কখনোই পাত্র ধরবেন না।
*ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এভাবে ছোঁয়া হলে পবিত্রতা নষ্ট হয় এবং তা অশ্রদ্ধা হিসেবে গণ্য।
আরও পড়ুন
ইলিশ-ভেটকির বদলে নতুন স্বাদে গন্ধরাজ চিংড়ি পাতুরি
সাধারণ জল মেশানো যাবে কি?
গঙ্গাজল ফুরিয়ে এলে অনেকেই বোতলে কলের জল বা অন্য কোনও জল মিশিয়ে দেন।
কিন্তু শাস্ত্রে বলা আছে—অন্য জল মিশিয়ে গঙ্গাজল বানানো যায় না। এতে গঙ্গাজলের গুণ ও পবিত্রতা নষ্ট হয় বলে মনে করা হয়।
তাই প্রয়োজন হলে নতুন করে গঙ্গাজল সংগ্রহ করাই উত্তম।
আরও পড়ুন
তারাপীঠ মন্দিরে ‘টাকার খেলা’ বন্ধ, গর্ভগৃহে প্রবেশে নয়া নিয়মে কড়াকড়ি