দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে রেল কর্তৃপক্ষ বড় উদ্যোগ নিয়েছে। এবার প্রতিটি ট্রেনের প্রতিটি কামরায় বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। আরপিএফের খড়গপুর ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই এই ডিভিশনের সমস্ত দূরপাল্লার ট্রেনের কোচে নজরদারি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। ইতিমধ্যেই সাঁতরাগাছি রেল কোচ ডিপোতে একাধিক ট্রেনে সিসিটিভি বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি নতুন তৈরি হওয়া এলএইচবি ও আইসিএফ কোচগুলিতেও ক্যামেরা যুক্ত করা হচ্ছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি কোচে থাকছে চারটি করে ক্যামেরা। আরপিএফ কর্তৃপক্ষের দাবি, এতে ট্রেনের ভিতরে যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা দ্রুত চিহ্নিত করা যাবে এবং দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করতেও সহজ হবে। বর্তমানে পর্যাপ্ত আরপিএফ কর্মী না থাকায় বেশিরভাগ ট্রেনে এসকর্ট দিয়ে নজরদারি করা সম্ভব হয় না। ফলে যাত্রী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে দীর্ঘদিন ধরে।
সম্প্রতি ধৌলি এক্সপ্রেসে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনার পর এই প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। শৌচাগার থেকে বেরিয়ে সিটে ফেরার পথে দুই দুষ্কৃতী এক মহিলা যাত্রীর গলার সোনার হার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। বাধা দিতে গিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর ডান হাতটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই ঘটনার পরই যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে সর্বত্র, এবং রেল কর্তৃপক্ষ তৎপর হয় নজরদারি বাড়াতে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের খড়গপুর ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার প্রকাশ কুমার পান্ডা জানিয়েছেন, কর্মীসংখ্যার সীমাবদ্ধতার কারণে সব ট্রেনে এসকর্ট পাঠানো সম্ভব নয়। তাই সিসিটিভি-ই হতে পারে নিরাপত্তার সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার। রেল বোর্ডের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী ছয় মাসে পুরো প্রকল্প সম্পন্ন করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
রেল বোর্ড চার মাস আগে একটি নির্দেশিকায় জানিয়েছিল, দেশের প্রতিটি ট্রেনের কামরায় সিসিটিভি বসানো হবে। সারা দেশে মোট প্রায় ৭৪ হাজার কোচে ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। শুধু দূরপাল্লা নয়, ভবিষ্যতে লোকাল ট্রেনেও ক্যামেরা বসানো হবে বলে জানা গেছে। লোকাল ট্রেনে সাধারণত আরপিএফ এসকর্ট থাকে না, ফলে দ্রুত নজরদারির প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি।
আরও পড়ুন
হাওড়া ডিভিশনে চার দিন একাধিক ট্রেন বাতিল, পরিবর্তিত রুটেও চলবে অনেক এক্সপ্রেস
প্রকাশ পান্ডা জানিয়েছেন, আপাতত দূরপাল্লার ট্রেনগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। লোকাল ট্রেনে কবে থেকে ক্যামেরা বসানো শুরু হবে, তা পরে জানানো হবে।
আরও পড়ুন
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে কঠোর মন্তব্য প্রধান বিচারপতির, ‘লাল কার্পেট বিছিয়ে স্বাগত নয়’
রেলযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রেল দফতরের কর্তারা। সিসিটিভি নজরদারি চালু হলে ট্রেন যাত্রা আরও নিরাপদ হবে বলে আশা সকলের।
আরও পড়ুন
সেলফিতেই রোগ নির্ণয়! এআই জানাবে বয়স ও স্বাস্থ্যঝুঁকি