Changing climate has a negative impact on physical and mental health

বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর জলবায়ুর চিত্র। পৃথিবীতে দূষণ বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গোটা বিশ্বের আবহাওয়ায় বিরাট পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। আন্টার্কটিকায় হিমবাহে গলন শুরু হয়েছে। এরফলে গোটা বিশ্বের আবহাওয়ার উপর প্রভাব পড়ছে। ছাড় নেই ভারতেরও। ভারতের জলবায়ুতেও একাধিক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যার ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়ছে।

অপুষ্টিজনিত রোগের শিকার হচ্ছে শিশুরা – জলবায়ুর বদলের ফলে উষ্ণতা বাড়ছে। বৃষ্টির অভাবে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশবিদদের মতে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভয়ঙ্কর জলবায়ুর পরিবর্তন ও তার ক্ষতিকর প্রভাব টের পাবে ভারত। দেশের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলে পাহাড়প্রমাণ ঢেউ আঁচড়ে পড়বে। ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে৷ এরফলে ফসলের ফলন কমবে ও তৈরি হবে খাদ্য সংকট। ২০৫০ সালে ভারতে অপুষ্টির সংখ্যা বাড়বে আরও ২০ শতাংশ। রাষ্ট্রপুঞ্জের সমীক্ষার মাধ্যমে জানা গিয়েছে, পাঁচ বছরের নীচে শিশু অপুষ্টির শিকার। ২০১৯-এর এক সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতে প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে ৩৭ জন শিশুর মৃত্যু হয় অপুষ্টিতে। দেশের ২১ শতাংশ শিশু পুষ্টি ও সুষম আহার পায়। বাকি ৭৯ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে থেকে যায়। অপুষ্টির ফলে সুগার, হাইপার টেনশন, কিডনির অসুখ জাঁকিয়ে বসছে ৫ বছরের কম শিশুদের মধ্যে।

মানসিক অসুখ – পৃথিবীর তাপমাত্রা যত বাড়বে তত স্নায়ুজনিত সমস্যা বৃদ্ধি পাবে। পৃথিবীতে তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে তেমনই আবহাওয়ার বদল ঘটছে। এর ফলে মানুষের মধ্যে অ্যালঝাইমার্স, স্মৃতিনাশ বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগ, স্নায়ুর নানা অসুখ বৃদ্ধি পাবে। বাতাসে ভাসমান বিষাক্ত কণা স্নায়ুর উপর প্রভাব ফেলছে।

পরজীবি বাহিত রোগ – সম্প্রতি এক তথ্য বলছে, জলবায়ু বদলের ফলে পরজীবীদের উপর প্রভাব পড়ছে। ম্যালেরিয়া রোগের বাহক অ্যানোফিলিস মশার রূপের বদল ঘটছে। এভাবেই জিনের গঠনবিন্যাসে অ্যানোফিলিস মশার পরিবর্তন ঘটছে। এরফলে তা কীটনাশকের সাহায্য মারা সম্ভব হচ্ছে না ও ছড়াচ্ছে রোগ।

মানসিক অসুখ যেমন মাথাচাড়া দিচ্ছে তেমনই অসংক্রমনজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। গবেষকদের মতে, পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ মানুষ হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। ধুমপান না করলেও হার্টের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বাতাসে বিষাক্ত গ্যাস ও অ্যারোসলের মাত্রা বাড়ছে। এর পাশাপাশি কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, বেনজিন, সালফার ডাই অক্সাইড, ওজোন ও আরও কয়েকটি বিষাক্ত গ্যাসের সংস্পর্শে আসলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি বাড়ছে। বাতাসে ভাসমান বিষাক্ত কণা শরীরে প্রবেশ করে হার্ট রেট বাড়িয়ে দেয়।

তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মানসিক চাপ অবসাদ বাড়ছে৷ এর ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সময়ে মানুষ অতিরিক্ত উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় ভুগছেন।