আমেরিকার ভারী উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাচ্ছে ISRO-র ‘বাহুবলি’ রকেট LVM3

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO আবারও বিশ্বমঞ্চে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক ছুঁতে চলেছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এমন এক উৎক্ষেপণের সাক্ষী হতে চলেছে দেশ, যা আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা এবং বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণ বাজারে ভারতের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেবে। প্রথমবারের মতো ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট LVM3—যা ‘বাহুবলি রকেট’ নামেই বেশি পরিচিত—মহাকাশে পাঠাতে চলেছে আমেরিকার একটি ভারী বাণিজ্যিক উপগ্রহ।

ISRO সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১৫ ডিসেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় অবস্থিত সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে ৬.৫ টন ওজনের মার্কিন স্যাটেলাইট BlueBird-6। এই উপগ্রহকে নিম্ন পৃথিবীর কক্ষপথে (LEO) পৌঁছে দেবে LVM3 লঞ্চ ভেহিকেল। এর মাধ্যমে প্রথমবার কোনও মার্কিন বেসরকারি সংস্থার এত বড় ওজনের স্যাটেলাইট বহন করবে ভারতের এই রকেট।

উল্লেখযোগ্যভাবে, LVM3 আগেও নিজের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। এর আগে ভারতের সবচেয়ে ভারী স্যাটেলাইট CMS-03 (৮.৮ টন) সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছিল এই রকেট। তবে এবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণে LVM3-এর ব্যবহার ISRO-র জন্য এক নতুন অধ্যায়।

BlueBird-6 স্যাটেলাইট তৈরি করেছে টেক্সাসভিত্তিক মার্কিন সংস্থা AST SpaceMobile Inc.। এই সংস্থার মূল লক্ষ্য হল পৃথিবীর যে কোনও দূরবর্তী বা নেটওয়ার্ক-বঞ্চিত এলাকায় সাধারণ স্মার্টফোনেই উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া। BlueBird-6 ইতিমধ্যেই অক্টোবর মাসে আমেরিকা থেকে ভারতে আনা হয়েছে। বর্তমানে শ্রীহরিকোটায় এর চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এরপর ফুয়েলিং এবং LVM3 রকেটের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন করা হবে।

প্রযুক্তিগত দিক থেকে BlueBird-6 অত্যন্ত আধুনিক। জানা গিয়েছে, এতে থাকবে ২৪০০ বর্গফুটের বিশাল ফেজড-অ্যারে অ্যান্টেনা, যা নিম্ন কক্ষপথে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অ্যান্টেনা হিসেবে পরিচিত হতে চলেছে। এটি আগের BlueBird-1 এবং BlueBird-5 মডেলের তুলনায় তিনগুণ বড় এবং ডেটা ক্যাপাসিটি দশগুণ বেশি। এর ফলে দুর্গম অঞ্চল, গ্রামীণ এলাকা এবং ইন্টারনেট পরিষেবা থেকে বঞ্চিত অঞ্চলে সরাসরি মোবাইল ফোনে হাই-স্পিড ব্রডব্যান্ড পরিষেবা পৌঁছবে।

আরও পড়ুন
বিজয় দিবসে ভারতীয় নৌসেনার শক্তি বাড়াচ্ছে বাংলায় তৈরি দেশীয় ‘ডাইভিং সাপোর্ট ক্রাফট’

অন্যদিকে, ভারতের ‘বাহুবলি রকেট’ LVM3-ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে অত্যন্ত শক্তিশালী। প্রায় ৬৪০ টন ওজনের এবং ৪৫.৫ মিটার উচ্চতার এই তিন ধাপের রকেটটি নিম্ন পৃথিবীর কক্ষপথে সর্বোচ্চ ৮০০০ কেজি এবং জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিটে (GTO) ৪০০০ কেজি পর্যন্ত পে-লোড বহনে সক্ষম। এই রকেটের বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণের দায়িত্বে রয়েছে নিউস্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেড (NSIL)।

আরও পড়ুন
HSBC-এর নজরে টাটা কনজিউমার প্রোডাক্টস: ১৮% ঊর্ধ্বগতির সম্ভাবনায় বিনিয়োগকারীদের আশা

সব মিলিয়ে, ১৫ ডিসেম্বরের এই উৎক্ষেপণ শুধুমাত্র একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নয়, বরং ভারতের মহাকাশ প্রযুক্তি, নির্ভরযোগ্যতা এবং বাণিজ্যিক সক্ষমতার এক শক্তিশালী বার্তা বিশ্বকে দেওয়ার প্রস্তুতি। এখন নজর শুধু সেই ঐতিহাসিক দিনের দিকেই।

আরও পড়ুন
নোয়াপাড়া বদল নয়, একই মেট্রোয় বিমানবন্দর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম—শুরু নতুন সরাসরি পরিষেবা

শুধু হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয় না, জোয়ান খেলে শরীরের অনেক সমস্যা নিবারণ হয় মুখরোচক বাদাম চিক্কি খেতে দারুন, বাড়িতেই তৈরী হবে, জানুন রেসিপি এইভাবে তেজপাতা পোড়ালে দুশ্চিন্তা কেটে যাবে 5 Best Night Creams ৪ মাসের শিশু ২৪০ কোটির মালিক