কলকাতার বর্ষাকাল মানেই বহু অঞ্চলে জলজমা, পাম্প চালিয়ে সেই জল নামানো, আর নাগরিকদের দুর্ভোগ। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজছিল কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)। এবার সেই পথেই বড় উদ্যোগ—শহরে শুরু হতে চলেছে ভূগর্ভস্থ রেন ওয়াটার হারভেস্টিং প্রকল্প। বহুতলের ছাদে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের প্রচলিত পদ্ধতি এবার বদলে, সরাসরি মাটির গভীরে পাঠানো হবে বর্ষার জল। এর ফলে শুধু জলজমাই কমবে না, ভূগর্ভস্থ জলস্তরও বাড়বে বলে আশা পুরসভার।
পুর নিকাশি বিভাগের সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে কমপক্ষে ৯০টি এলাকা বর্ষায় সবচেয়ে বেশি জলজমার সমস্যায় ভোগে। বাগবাজার, আমহার্স্ট স্ট্রিট, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি, চেতলা, কালীঘাট, জাজেস কোর্ট রোড ও গার্ডেনরিচ জল উৎপাদন কেন্দ্রের আশপাশ—এই সব অঞ্চলকে প্রাথমিকভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, মাটির প্রায় ১০ মিটার নিচে দু’টি আলাদা চেম্বার তৈরি করা হবে। রাস্তার ধারে খোলা পাইপ দিয়ে বর্ষার জল প্রথম চেম্বারে জমা হবে। সেখানে জল থিতিয়ে গেলে পাশের আরও ছোট ‘মাইক্রো চেম্বার’-এ যাবে। দ্বিতীয় চেম্বারে পৌঁছে পরিশোধিত জল ধীরে ধীরে মাটির ভেতরে চলে যাবে এবং ভূগর্ভস্থ জলস্তরকে পুনরুজ্জীবিত করবে। আর্সেনিকের প্রকোপ কমাতেও এই পদ্ধতি কার্যকরী হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পুরসভা জানিয়েছে, কাজ শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট বরো চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলোচনা চলবে। কোন এলাকায় ঠিক কোথায় বেশি জল জমে, তার তথ্য তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকেই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্যভাবে জানা যাবে। এই প্রকল্প সফল হলে রাজ্যের অন্যান্য পুরসভাও একই উদ্যোগ নিতে পারে বলে মনে করছে কলকাতা পুরসভা।
কর্তৃপক্ষের দাবি, পূর্ব ভারতে এই প্রথম কোনও পুরসভা এত বিস্তৃত পরিসরে ভূগর্ভস্থ রেন ওয়াটার হারভেস্টিং ব্যবস্থা গড়ে তুলছে। যদি এই প্রকল্প সফল হয়, তবে কলকাতার জলজমার দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধান মিলতে পারে—সেই সঙ্গে বাড়বে ভূগর্ভস্থ জলের স্বাস্থও।
আরও পড়ুন
FIFA World Cup 2026: বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী ঘিরে তোলপাড়, তবুও উত্তেজনার কেন্দ্র ফুটবলই