অবশেষে থামল তবলার বোল। গতকাল মৃত্যু হয়েছে কিংবদন্তি তবলা বাদক জাকির হোসেনের। গতকাল রাতে সান ফ্রান্সিসকোতে মৃত্যু হয় শিল্পীর। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বলিউড থেকে টলিউড। তবলায় বোল যদি কেউ তৈরি করতে পারতেন তিনি হলেন জাকির হোসেন। তার সঙ্গে তুলনা করা হতো কোহিনূরের। জাকির এতই ব্যক্তিত্ববান ও কিংবদন্তি একজন মানুষ ছিলেন।
মাত্র ৩ বছর বয়সে তিনি তবলা বাজানো শুরু করেন। তার তবলায় হাতেখড়ি হয় তার বাবা আল্লা রাখার কাছে। মাত্র ৭ বছর বয়সে সকলের সামনে তিনি তবলা বাজানোর অনুষ্ঠান করা শুরু করেন। এরপর মাত্র ১২ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক স্তরে তিনি অনুষ্ঠান করতে শুরু করেন। জাকির হোসেন তার কোলাবোরেশান অ্যালবামের জন্য গ্র্যামি পুরস্কারও পেয়েছেন।
তাকে সাদা পোশাকে গ্র্যামি পুরস্কার নিতে দেখা গিয়েছিল। এর পাশাপাশি তাকে ভারত সরকারের তরফে দেওয়া হয়েছে পদ্মভূষণ ও পদ্মবিভূষণ পুরস্কার। তবলা বাজানোর পাশাপাশি তিনি মিউজিক কম্পোজার হিসেবেও কাজ করেছেন। তার বলিউডের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বেশ ভালো।
জাকির হোসেন তার তবলা বাজানোর পাশাপাশি পড়াশোনাতেও নিজেকে উন্নত করেছেন। অর্থনীতিতে তিনি ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার বাবার ইচ্ছেতে তিনি পড়াশোনার দিকে নজর দিয়েছিলেন। তিনি যেমন একা তবলা বাজাতেন তার পাশাপাশি তাকে দেখা গিয়েছে পন্ডিত বিরজু মহারাজের সঙ্গে অনুষ্ঠান করতে।
জাকির হোসেনের এক প্রিয় বন্ধু ছিলেন পন্ডিত শিবকুমার শর্মা। বন্ধুর মৃত্যুর পর তার শবদেহকে কাঁধে করে শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ধর্মের উর্ধ্বে গিয়ে তাদের বন্ধুত্ব সেদিন সকলকে মুগ্ধ করেছিল। অবশেষে এহেন মহান শিল্পী ৭৩ বছর বয়সে তার তবলার বোল থামিয়ে চলে গেলেন অজানা দেশের উদ্দেশ্যে।