জ্বর হল দেহের স্বাভাবিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শিশুর শরীর অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার করে, আর তখনই দরকার সঠিক খাদ্য ও পর্যাপ্ত জল। কিন্তু জ্বর হলে অধিকাংশ শিশুই খেতে চায় না, ফলে বাবা-মায়েরা দোটানায় পড়ে যান—কী খাওয়ালে দ্রুত সেরে উঠবে? আর কোন খাবার এড়াতে হবে? চিকিৎসকদের মতে, এই সময় সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাদ্যই শিশুদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী।
জ্বরের সময় কেন বিশেষ খাদ্য জরুরি?
জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে, বিপাকক্রিয়া বেড়ে যায় এবং শরীর সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এতে অতিরিক্ত শক্তি, তরল ও পুষ্টির প্রয়োজন হয়। শিশুর খিদে কম থাকলেও বারবার অল্প পরিমাণে খাবার দিলে শক্তি বজায় থাকে এবং সুস্থ হতে সময় কম লাগে।
হাইড্রেটেড রাখা সবচেয়ে জরুরি
জ্বরের কারণে ঘাম বেশি হয় এবং শরীর দ্রুত পানি হারায়। এই ঘাটতি পূরণে—
পরিষ্কার জল
ORS
ডাবের জল
লেবুর শরবত
রাগির জাউ
এসব শিশুকে দিন। এগুলো শুধু পানি নয়, প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইটও সরবরাহ করে, যা দুর্বলতা কমায় ও ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে।
স্যুপ, খিচুড়ি—সহজপাচ্য খাবার দিন
জ্বরের সময় পেটে ভারী খাবার না দিয়ে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার দেওয়াই ভালো। যেমন—
সবজির স্যুপ
ডাল
পাতলা খিচুড়ি
সেদ্ধ সবজি
কলা
ডালের মতো সহজ প্রোটিন শরীরের শক্তি বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। গরম স্যুপ শরীরকে আরাম দেয় এবং হজমেও সাহায্য করে।
তৈলাক্ত ও ভাজাভুজি খাবার এড়িয়ে চলুন
জ্বরের সময় তেলের খাবার হজম হয় না এবং গ্যাস্ট্রিক বা বমি ভাব বাড়ায়। তাই—
ভাজাভুজি
চিপস
তেলযুক্ত খাবার
ফাস্ট ফুড
মশলাদার খাবার
এসব একেবারেই দেবেন না। এছাড়া আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিঙ্কস গলা ব্যথা বাড়িয়ে শিশুকে আরও অস্বস্তিতে ফেলতে পারে।
চকলেট ও মিষ্টি খাবার নয়
জ্বরের সময় চকলেট, কেক, মিষ্টি জুস বা অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এসব খাবারে পুষ্টিগুণ কম অথচ চিনি বেশি, ফলে দেহের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ধীর হয়।
এ ছাড়া প্যাকেটজাত নুডলস, প্রক্রিয়াজাত খাবারও এড়ানো উচিত।
সারসংক্ষেপ
জ্বরের সময় শিশুকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা না করে বারবার অল্প পরিমাণে হালকা, পুষ্টিকর ও পানিযুক্ত খাবার দিন। পানিশূন্যতা যেন না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখুন। সঠিক খাদ্যই দ্রুত সুস্থতার চাবিকাঠি।
আরও পড়ুন
ঢেঁড়স ডিটক্স জল: এক মাসের নিয়মে বাড়তে পারে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা, কমতে পারে একাধিক ঝুঁকি
