Ram Mandir and Ramayana at the top of the title

গত ২২শে জানুয়ারি উদ্বোধন হয়েছে অযোধ্যার রাম মন্দিরের। আর এই মন্দির উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর পাশাপাশি তিনি গতবছর ৩০শে ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন অযোধ্যায় নবনির্মিত মহর্ষি বাল্মীকি বিমানবন্দরের। বন্দরের নাম রাখা হয়েছে মহর্ষি বাল্মিকীর নামানুসারে। মহর্ষি বাল্মিকীকে রামায়ণের একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র হিসেবে ধরা হয়। এর পাশাপাশি মহর্ষি বাল্মিকীকে সংস্কৃতে আদি কবি বা ‘প্রথম বা মূল কবি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

রামায়ণকে সাহিত্য সৃষ্টির প্রথম মহাকাব্য হিসেবে ধরা হয়। আর এই মহাকাব্যটি রচনা করেছেন মহর্ষি বাল্মিকী। আর তাই তিনি ভগবান শ্রী রামের গল্পের স্রষ্টা হিসেবে বিখ্যাত। মহর্ষি বাল্মিকীর তৈরি রামায়ণের সাতটি কাণ্ড রয়েছে। প্রতিটি কাণ্ডে রয়েছে রামায়ণের শ্রী রামের আলাদা আলাদা কর্মকাণ্ড। বাল্মিকীর রচিত রামায়ণে রামের কর্মকাণ্ডের প্রথম অধ্যায়ে ‘বালা’ ও শেষ অধ্যায়ে ‘উত্তর কান্ড’-এ বাল্মিকী নিজেই হাজির হয়েছেন।

বালা কাণ্ডে মহর্ষি বাল্মিকী ঋষি নারদকে জিগ্যেস করেন এখনও পৃথিবীতে কোনো ধার্মিক মানুষ অবশিষ্ট আছেন কিনা। বাল্মিকীর এই প্রশ্নের উত্তরে নারদ জানান ‘রাম’-এর কথা। উত্তরকাণ্ডে দেখা যায়, রাম তার স্ত্রী সীতাকে নির্বাসিত করার পর সীতা বাল্মিকীর আশ্রমে আশ্রয় পান। এরপর সেই আশ্রমে তিনি দু’টি যমজ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। যারা হলেন লব ও কুশ৷

এই প্রসঙ্গে ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার ‘আর্লি ইন্ডিয়া’-তে মন্তব্য করেছেন, “বাল্মীকি রামায়ণকে প্রথম রচিত কোনও সচেতন সাহিত্য হিসেবে বর্ণনা করা যায়। আদিকাব্যের মত বর্ণনা অন্য কোনও মহাকাব্যে পাওয়া যায়নি।” ‘রামায়ণ’-এর সাহিত্য বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় যে সেটি ঋষি ব্যাস রচিত ‘মহাভারত’-এর চেয়ে প্রাচীন। এই প্রসঙ্গে রোমিলা থাপার বলেন, “রামায়ণের ভাষা আরও মসৃণ এবং এর ধারণাগুলো পরবর্তী সমাজের সঙ্গে আরও বেশি সম্পর্কিত। যদিও ঐতিহ্যগতভাবে রামায়ণ আগের বলে মনে করা হয়।”

রামায়ণের ‘বালা’ ও ‘উত্তর কাণ্ড’ সম্পর্কে ইতিহাসবিদেরা মনে করেন, এই দু’টি অধ্যায় সম্ভবত মহাকাব্যের পরবর্তী সংযোজন। এই প্রসঙ্গে আরশিয়া সাত্তার তার ‘উত্তরা: দ্য বুক অফ অ্যানসার্স ‘-এ লিখেছেন, ‘প্রথম এবং শেষ অংশগুলোর ভাষা এবং সুরের পরিপ্রেক্ষিতে স্পষ্ট যে তা পরবর্তী ভাষাগত এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, পরবর্তী ধর্মতাত্ত্বিক সময় থেকে এসেছে। সেই সময় থেকে, যখন বিষ্ণু দেবতা হয়ে উঠেছেন।’

এর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “এখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে রাম হলেন ঈশ্বর। তিনি বিষ্ণুর অবতার। বিষ্ণুকে অন্যান্য দেবতারা মানব রূপ ধারণ করতে এবং রাবণকে হত্যা করতে প্ররোচিত করেছিলেন। রামায়ণের সংস্করণ উপমহাদেশে এবং এর বাইরেও বিভিন্ন ভাষায় প্রদর্শিত হওয়ায় দেবতা হিসেবে রামের গল্পটি পরে বৈষ্ণব ভক্তির একটি অংশ হয়ে ওঠে।”