সমাজ প্রগতিশীল হলেও বিধবাদের উপর আজও চলে সূক্ষ্ম নিষেধাজ্ঞা। ‘পিঞ্জর’ ছবিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন শতাক্ষী নন্দী।
বিধবাদের সূক্ষ্ম কোণঠাসা করা—‘পিঞ্জর’-এ শতাক্ষীর বক্তব্য
সমাজ যতই আধুনিক হোক, বিধবাদের প্রতি সূক্ষ্ম বৈষম্য আজও রয়ে গিয়েছে—এমনই পর্যবেক্ষণ অভিনেত্রী শতাক্ষী নন্দীর। রুদ্রজিৎ রায়ের নতুন ছবি ‘পিঞ্জর’-এ একজন অল্পবয়সী বিধবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ছবিতে ‘পারমিতা’ নামের এই চরিত্রটি স্বামী হারানোর পর নিজের ইচ্ছেগুলোকে গুটিয়ে নিয়ে নীরব জীবনের পথে হাঁটে।
শতাক্ষী জানান, বাস্তব জীবনেও বিধবারা নানা ছুতমার্গ, নিষেধ এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হন। বিশেষ করে তাদের কামনা–বাসনাকে কেন্দ্র করে সমাজের কটাক্ষ আরও তীব্র হয়, যা ছবিতেও উঠে এসেছে।
অভিনেত্রী নিজের অভিজ্ঞতার কথাও শেয়ার করেছেন। অল্প বয়সে বাবাকে হারানোয় তিনি কাছ থেকে দেখেছেন মায়ের প্রতিদিনের লড়াই। যদিও পরিবারের তরফে কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না, তবুও সমাজের কাঠামো তাঁর মায়ের মনেও তৈরি করেছিল আত্মনিয়ন্ত্রণের চাপ—সাদা বা হালকা রঙের শাড়ি, সরল সাজ, ইচ্ছাগুলোকে চাপা রাখা। সময়ের সঙ্গে তিনি সেই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসছেন।
আরও আগের প্রজন্ম, বিশেষ করে দিদার ক্ষেত্রে, এই ‘অদৃশ্য শৃঙ্খল’ ছিল আরও কঠোর। নিজের ভাললাগা আর সামাজিক চাহিদার মধ্যে সীমারেখা কখন যেন ঝাপসা হয়ে যেত।
শহুরে জীবনে পরিবর্তন এসেছে, তবে গ্রামের প্রান্তিক এলাকায় এখনও নানা রকম ছুতমার্গ দেখা যায়। সেই বাস্তবতার ছায়াই রয়েছে ‘পিঞ্জর’-এ। পারমিতা সমাজের চোখরাঙানি পেরিয়ে প্রেমে পড়লেও সমাজ কি তাকে মেনে নেবে?
পরিচালক রুদ্রজিৎ রায়ের কথায়, “আসলে আমরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও খাঁচায় বন্দি। নিজের খাঁচা ভেঙে বেরিয়ে আসাই সবচেয়ে বড় লড়াই। পারমিতার গল্পও সেই আত্ম-অন্বেষণের।”
FAQ
১. ‘পিঞ্জর’ ছবির মুখ্য চরিত্র কে?
পারমিতা নামের এক অল্পবয়সী বিধবা মহিলা।
২. চরিত্রটি কে অভিনয় করেছেন?
অভিনেত্রী শতাক্ষী নন্দী।
৩. সমাজে বিধবাদের কোন ধরনের বাধা বেশি দেখা যায়?
সূক্ষ্ম নিষেধ, কটাক্ষ, ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণের চাপ এবং পোশাক–আচরণে অদৃশ্য নিয়ম।
৪. ছবিতে কোন বিষয়টি বিশেষভাবে উঠে এসেছে?
বিধবাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা, অনুভূতি ও কামনার প্রতি সমাজের সংকীর্ণ দৃষ্টি।
৫. শতাক্ষীর ব্যক্তিজীবনের কোন অভিজ্ঞতা ছবির চরিত্রে প্রভাব ফেলেছে?
বাবাকে অল্প বয়সে হারানো এবং মায়ের বিধবা–জীবনকে কাছ থেকে দেখা।
৬. তাঁর মা কী ধরনের সামাজিক চাপ অনুভব করেছিলেন?
সাদা বা হালকা রঙের শাড়ি পরা, সাজগোজ কম করা, আত্মনিয়ন্ত্রণের চেষ্টা।
৭. শহর ও গ্রামে কি সামাজিক আচরণে পার্থক্য আছে?
হ্যাঁ। শহরে কিছুটা পরিবর্তন এলেও গ্রামে এখনও ছুতমার্গ বেশি প্রকট।
৮. ‘পিঞ্জর’-এর মূল বার্তা কী?
নিজের খাঁচা ভেঙে নিজের পরিচয় খুঁজে পাওয়ার লড়াই।
৯. ছবির পরিচালক কে?
রুদ্রজিৎ রায়।
১০. পারমিতার প্রেম কি সমাজ মেনে নেয়?
এটাই ছবির মূল প্রশ্ন এবং দ্বন্দ্ব।
#Widowhood #SocialIssues #PInjorMovie
