বিমানে বসে নিজের ছবি তুলতে গিয়ে দেখেন চাহনিটা ঠিক তার বাবার মতোন হয়েছে, তাইতো এই বিশেষ ছবি সকলের সাথে ভাগ করে নিতে ভুললেন না অভিনেত্রী স্বস্তিকা। তিনি তার বাবা এবং মায়ের অনুপস্থিতি ঠিক কতটা অনুভব করেন তা বোঝা যায় বিভিন্ন পোস্ট দেখেই।এই পৃথিবীতে না থাকলেও তারা যে সব সময় সন্তানদের মধ্যেই রয়েছেন সে বিষয়টাই বোঝাতে চান অভিনেত্রী।
এর আগেও বারবার পোস্ট করে জানিয়েছিলেন তার বাবা-মা তাদের মধ্যে রয়েছেন। এবার আরও একটি ছবি পোস্ট করে তুলে ধরলেন মনের কথা। লিখেছেন, ‘ছোটবেলা থেকে দেখেছি, বাবা একটু বেশি মনোযোগ দিয়ে কথা বললে চোখটা কেমন অন্যরকম হয়ে যেত। বা অন্যমনস্ক হয়ে রইলে চোখটা সেই অন্য রকম। আনমনে কথা বললেও দেখতাম চোখের মনি টা কেমন যেন ফট করে আলাদা হয়ে যেত। হটাৎ ডাকলে যদি তাকায়, সেই চোখ টা আবার আলাদা।’
“একটু বড় হতে বুঝলাম একে বলে লক্ষ্মী ট্যারা চাহনি টা খালি একটু খানি, একটু খানি অন্য রকম। বাবা কে কী মিষ্টি লাগত। ‘ওই রকম করো না চোখটা’ এটা বললেই বাবা বলত, আরে ওরম ইচ্ছে করলেই হয়না, করা যায় না। ‘ট্যারা হব দেখবি?’ সে ট্যারা তো সবাই হতে পারে। নাকের ডগায় আঙুল রেখে, বা ভুরু যুগলের মধ্যে আঙুল রেখে তাকানোর চেষ্টা করলেই ট্যারা।”
‘কিন্তু লক্ষ্মী ট্যারা ব্যাপার টা স্পেশাল। বাবা চলে যাওয়ার পর, অনেক রাত অব্দি বোনের সঙ্গে গল্প করলে বোন মাঝেমাঝে বলত, এই দিদি চোখ টা ঠিক কর, বাবার মতন হয়ে গেছে। বা বলত, দিদি পুরো বাবার মতন তাকালি, বা বলত, পুরো বাবা মনে হলো চোখ টা, ওরম করে তাকাস না আহারে, এই দিদি চোখ টা ঠিক কর। ‘আমি পাতা ফেলে, চোখ পিটপিট করে ঠিক করে নিতাম আর মনে মনে স্বস্তির হাসি হাসতাম। আমরা তো সবাই চাই, এটাই আমাদের সুপ্ত বাসনা, আমরা যেন আমাদের বাবা মায়ের মতন হই।’
‘গতকাল ফ্লাইটে আসার সময় ভাবলাম, সূর্যের এত কাছে আছি কটা ছবি তুলি, নিজস্বি। ঠিক দুটো তুললাম। ওমা ফটো টায় তাকিয়ে দেখি সেই বাবার মতন হয়ে আছে চোখ টা। সঙ্গে সঙ্গে আরও কয়েকটা তুললাম যাতে বাবার মতন হয়ে থাকতে থাকতে আরও কটা ছবি থেকে যায়। এক ফোটা নড়িনি চড়িনি, চোখের পাতাও ফেলিনি। হলো না। আর একটাও হলো না। প্লেন টা নামা অব্দি ভাবলাম, এই আকাশে বাবা থাকে, মেঘের মধ্যে, সূর্যের কিরণের মধ্যে। আমিও আছি দেখে বোধহয় টুক করে এসে জানান দিয়ে গেল। এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয়ে আলোয়ে…’