রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে কী করবেন? চিকিৎসকদের মতে জলই সবচেয়ে কার্যকর সমাধান
রক্তে ইউরিক অ্যাসিড থাকা স্বাভাবিক হলেও, শরীরে এর মাত্রা বেড়ে গেলে দেখা দিতে পারে নানা জটিলতা। সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড রক্তে মিশে কিডনির মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে তা থেকে হাইপারইউরেসেমিয়া, গেঁটে বাত, কিডনিতে পাথর এমনকি হার্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ এবং প্রাকৃতিক উপায় হলো—শরীরকে পর্যাপ্ত জল দিয়ে আর্দ্র রাখা। যথেষ্ট পরিমাণে পানি পেলে শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে এবং অতিরিক্ত অ্যাসিড সহজেই কিডনি দিয়ে বেরিয়ে যায়।
জল কীভাবে কাজ করে?
জলকে বলা হয় শরীরের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার।
রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেশি হলে জল তাকে পাতলা করে দেয়, ফলে কিডনি সহজে ছেঁকে ফেলতে পারে। কিন্তু শরীর ডিহাইড্রেটেড থাকলে এই অ্যাসিড জয়েন্ট, পা–হাতের অস্থিসন্ধি এবং কিডনিতে জমতে শুরু করে।
চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুযায়ী—যাদের ইউরিক অ্যাসিড বেশি, বিশেষ করে গেঁটে বাত রয়েছে, তাদের দিনে ২০০০–৩০০০ মিলিলিটার জল পান করা উচিত। ‘দ্য জার্নাল অফ নেফ্রোলজি’ও জানায়, পর্যাপ্ত জল পান করলে কিডনি রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
সারাদিনে কতটা জল প্রয়োজন?
বিশেষজ্ঞরা জানান, নির্দিষ্ট কোনও ছক নেই। তবে সাধারণভাবে—
পুরুষদের: অন্তত ৮–৯ গ্লাস
মহিলাদের: অন্তত ৭–৮ গ্লাস
একসঙ্গে অনেকটা না খেয়ে সারা দিনে অল্প অল্প করে সিপ করে জল খাওয়াই বেশি উপকারী।
দিনের শুরুতে ঈষদুষ্ণ জল, তার সঙ্গে কিছু লেবুর রস—ডিটক্সিফিকেশন আরও বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুন
Uric Acid: রোজ সকালে খান এই পানীয়, ইউরিক অ্যাসিড কমানোর মক্ষম অস্ত্র
FAQ
১. ইউরিক অ্যাসিড কী?
শরীরের পুরিন ভেঙে তৈরি হওয়া একটি বর্জ্য পদার্থ।
২. ইউরিক অ্যাসিড বেশি হলে কী সমস্যা হয়?
গেঁটে বাত, কিডনিতে পাথর এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৩. ইউরিক অ্যাসিড কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় কী?
পর্যাপ্ত জল পান করা।
৪. দিনে কত জল খাওয়া উচিত?
সাধারণত ৭–৯ গ্লাস, বয়স ও ওজন অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।
৫. একসঙ্গে অনেক জল খেলে কি উপকার বেশি হয়?
না, দিনের বিভিন্ন সময়ে অল্প অল্প করে পান করাই ভালো।
৬. গরম জল কি ইউরিক অ্যাসিড কমায়?
সরাসরি কমায় না, তবে ডিটক্স প্রক্রিয়া সক্রিয় করে।
৭. খালি পেটে লেবু মেশানো জল কি উপকারী?
হ্যাঁ, এটি হাইড্রেশন বাড়ায় এবং ডিটক্সে সহায়তা করে।
৮. ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার প্রধান কারণ কী?
পুরিনসমৃদ্ধ খাবার, ডিহাইড্রেশন, ওবেসিটি, অ্যালকোহল।
৯. জল কম খেলে কি ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে?
হ্যাঁ, ডিহাইড্রেশনে অ্যাসিডের ঘনত্ব বেড়ে যায়।
১০. রাতে জল পান করা কি ঠিক?
হ্যাঁ, তবে ঘুম ব্যাহত না হয় সেই পরিমাণে।
১১. নারকেল জল কি উপকারী?
হাইড্রেশন বাড়ায়, তাই পরোক্ষভাবে উপকারী।
১২. ঠান্ডা জল নাকি গরম জল ভালো?
দুটি-ই ভালো—প্রধান বিষয় হলো পর্যাপ্ত পান করা।
১৩. চা–কফি কি হাইড্রেশন কমায়?
অতিরিক্ত পান করলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে।
১৪. ইউরিক অ্যাসিড কমাতে কোন খাবার খাওয়া উচিত?
ফল, শাকসবজি, শস্য—যেগুলিতে পুরিন কম।
১৫. ইউরিক অ্যাসিড বেশি হলে ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন কি?
হ্যাঁ, যদি ব্যথা, ফোলা বা বারবার সমস্যা দেখা দেয়।
#Health
#UricAcid
#Hydration

