বিনিয়োগের দুনিয়ায় ফিক্সড ডিপোজিট বা এফডি বরাবরই একটি নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। চাকরিজীবী থেকে অবসরপ্রাপ্ত—সবাই কমবেশি নিজের টাকাকে সুরক্ষিত রাখতে ও নির্দিষ্ট রিটার্ন পেতে এফডির ওপর ভরসা করেন। তবে এবার ফিক্সড ডিপোজিটকে কেন্দ্র করে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)। এই নিয়ম অনুযায়ী, এফডিতে যতই টাকা রাখা হোক না কেন, ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হলে গ্রাহক সর্বোচ্চ মাত্র ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্তই বীমার সুবিধা পাবেন।
এফডিতে বিনিয়োগে নেই কোনও সর্বোচ্চ সীমা
আরবিআই পরিষ্কার জানিয়েছে, চাইলে গ্রাহক লক্ষাধিক বা কোটি কোটি টাকা পর্যন্তও ফিক্সড ডিপোজিটে বিনিয়োগ করতে পারেন। অনেক ব্যাঙ্ক আবার প্রয়োজন অনুযায়ী একাধিক এফডি অ্যাকাউন্ট খোলারও সুযোগ দেয়। ফলে বড় অঙ্কের টাকা রাখার ক্ষেত্রে এফডি বহু মানুষের প্রথম পছন্দ।
তবে ঝুঁকির জায়গা বীমা সুরক্ষায়
যদিও বিনিয়োগ সীমাহীন, কিন্তু নিরাপত্তা সীমাবদ্ধ—এমনটাই জানাচ্ছে নয়া নিয়ম। ব্যাঙ্কিং সুরক্ষার জন্য প্রতিটি গ্রাহক ডিপোজিট ইন্সুরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশনের (DICGC) আওতায় সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বীমা সুরক্ষা পাবেন।
অর্থাৎ, কোনও কারণে ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়ে গেলে এফডিতে যত টাকাই জমা থাকুক না কেন, ৫ লক্ষ টাকার বেশি ফেরত পাওয়া যাবে না।
ফলে, বড় অঙ্কের টাকা এক ব্যাঙ্কেই রেখে না দিয়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ভাগ করে রাখাই এখন হয়ে উঠছে গ্রাহকদের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ।
এফডির সুদের হার ও মেয়াদ
ফিক্সড ডিপোজিটে সাধারণত ১,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা বা তারও বেশি বিনিয়োগ করা যায়। বিভিন্ন ব্যাঙ্কে এফডির মেয়াদ ৭ দিন থেকে শুরু করে ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে।
উল্লেখ্য, মেয়াদ পূরণের আগে এফডি ভাঙতে চাইলে ব্যাঙ্ক নির্দিষ্ট হারে জরিমানা কেটে নেয়।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ পরামর্শ
এক ব্যাঙ্কে অতিরিক্ত টাকা রাখার আগে ঝুঁকি বিবেচনা করুন
৫ লক্ষ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ভাগ করে রাখুন
বীমা সুরক্ষার সীমা মাথায় রেখে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করুন
সুদের হার, মেয়াদ ও আগাম ভাঙার জরিমানার বিষয়টি আগে জেনে নিন
আরবিআইয়ের নতুন নির্দেশ গ্রাহকদের মনে করিয়ে দিচ্ছে—এফডি নিরাপদ হলেও অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া ঠিক নয়। সুরক্ষা সীমিত, তাই বিনিয়োগ হতে হবে আরও পরিকল্পিত ও বিচক্ষণ।
