মুক্তির আগেই বড়সড় আইনি বিপাকে পড়েছে রণবীর সিং অভিনীত ও আদিত্য ধর পরিচালিত বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘ধুরন্ধর’। শহিদ মেজর মোহিত শর্মার মা-বাবা দিল্লি হাই কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করে ছবির মুক্তি স্থগিতের আবেদন জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ—ছবিতে মেজরের জীবন, গোপন অভিযান ও আত্মত্যাগের ঘটনাকে অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা হয়েছে, যা শহিদের মরণোত্তর ব্যক্তিঅধিকারকে লঙ্ঘন করে।
পিটিশনে পরিবারের অভিযোগ
মেজর মোহিত শর্মার বাবা রাজেন্দ্র প্রসাদ শর্মা এবং মা সুশীলা শর্মা আদালতে দাবি করেন—
* নির্মাতারা অনুমতি না নিয়েই মোহিত শর্মার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ সিনেমায় তুলে ধরেছেন।
* বিশেষ করে তাঁর নেতৃত্বে কাশ্মীরে পরিচালিত গোপন সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের দৃশ্যও ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে।
* একজন শহিদের ব্যক্তিগত ত্যাগকে বিনোদনের উদ্দেশ্যে ‘বাণিজ্যিক পণ্য’ হিসেবে দেখানো ঠিক নয়।
* এই উপস্থাপন ভারতীয় ন্যায়সংহিতার ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্যক্তিগত অধিকারের লঙ্ঘন।
পরিবার পিটিশনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক, সেন্সর বোর্ড, পরিচালক আদিত্য ধর এবং জিও স্টুডিওর নামও উল্লেখ করেছে।
বিতর্কের সূত্রপাত পয়লা ঝলক থেকেই
* প্রথম ঝলক প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এই ছবি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে:
অতিরিক্ত রক্তারক্তি ও হিংসার দৃশ্য নিয়ে সমালোচনা।
* রণবীর সিংয়ের চরিত্রকে মেজর মোহিত শর্মার ছায়া বলে মনে করছেন বহু বিশ্লেষক।
* এমনকী ২০০০-এর দশকের গোড়ায় পাকিস্তানে ‘ইফতিকার ভট্ট’ পরিচয়ে মোহিতের গোপন মিশনের ঘটনাও ছবির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
পরিচালকের অস্বীকার
সমালোচনা বাড়তেই পরিচালক আদিত্য ধর স্পষ্টভাবে জানান—
রণবীরের চরিত্র মেজর মোহিত শর্মার অনুপ্রেরণায় তৈরি নয়।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যদি সত্যিই মোহিতের বায়োপিক করেন, তা হলে যথাযথ অনুমতি নিয়েই করবেন এবং সেটা শহিদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবেই নির্মিত হবে।
মুক্তি কি তবে পিছোবে?
আগামী ৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়ার কথা ‘ধুরন্ধর’। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ ও আদালতে মামলা দায়েরের পর ছবির ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। আদালত কী সিদ্ধান্ত নেবে, তার উপরই নির্ভর করছে মুক্তির দিন স্থগিত হবে কি না।
মেজর মোহিত শর্মা ভারতীয় সেনার এক অসীম সাহসী জওয়ান, অশোক চক্র এবং সেনা মেডেলপ্রাপ্ত এই শহিদের জীবন নিয়ে জনগণের আবেগ প্রবল। তাই ‘ধুরন্ধর’-কে ঘিরে এই আইনি টানাপোড়েন যে আরও বিতর্ক ডেকে আনবে, তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন,
হাসপাতালে আধঘণ্টা অপেক্ষার পরও ধর্মেন্দ্রকে শেষবার দেখতে পারলেন না মুমতাজ
