বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ফের এনডিএ-র ঝড়ো প্রত্যাবর্তনের পর এবার দৃষ্টি ঘোরাল পশ্চিমবঙ্গসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে। শুক্রবার ফলাফল প্রকাশের পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট বার্তা দিলেন—বিহারের জয় বিজেপির পরবর্তী লড়াইয়ের পথ আরও প্রশস্ত করল। তাঁর দাবি, এই জয়ের ধাক্কায় উৎসাহিত হয়েছেন কেরল, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি কর্মীরা।
মোদীর কথায়, “গঙ্গা বিহার থেকে বাংলায় বয়ে যাচ্ছে। বিজেপি বাংলা থেকেও জঙ্গল রাজ উৎখাত করবে। এই জয় বাংলায় বিজেপির জয়ের পথ খুলে দিয়েছে।” আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি ও অসমে বিধানসভা নির্বাচন। এর মধ্যে অসমে এনডিএ ইতিমধ্যেই ক্ষমতায় থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ ও কেরল এখনও বিজেপির নাগালের বাইরে। ফলে এই দুই রাজ্যকেই এবার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে গেরুয়া শিবির।
কংগ্রেসকে চাঁচাছোলা আক্রমণ
বিহারের জয় ঘোষণা পর্বেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের পর প্রতি নির্বাচনে কংগ্রেসের ধরাশায়ী পারফরম্যান্স প্রমাণ করছে দলটি এখন “পরজীবী” সংগঠনে বদলে গেছে।
মোদীর দাবি, ছয়টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হলেও কোথাও ১০০ আসন ছুঁতে পারেনি কংগ্রেস। এমনকি, এনডিএ-র আজকের জয়ের সমান বিধায়কও নেই তাদের সাত রাজ্য মিলিয়েও।
ইভিএম বিতর্ক নিয়েও কংগ্রেসকে বিঁধলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেস দেশের শত্রুদের ভুয়ো প্রচারকে হাতিয়ার করেছে, দেশের উন্নয়নে তাদের কোনও ইতিবাচক দিশা নেই। সেখানেই তিনি কংগ্রেসকে নতুন নাম দিলেন—“এমএমসি”, অর্থাৎ মুসলিম লিগ–মাওবাদী কংগ্রেস।
রাহুলকে নিশানা
রাহুল গান্ধীর নাম না করেই কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না মোদী। তাঁর অভিযোগ, বিহারের সংস্কৃতি ও উৎসবকে অবজ্ঞা করার মিথ্যা প্রচার চালানো হয়েছিল। “যারা ছট পুজোকে নাটক বলে, তারা বিহারের উন্নতির কথা কীভাবে বলবে?”—প্রশ্ন তুললেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, বিহারের মানুষ এবার তুষ্টিকরণ নয়, সন্তুষ্টিকরণের রাজনীতিকেই বেছে নিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিশ্বাস ব্যক্ত করলেন, জঙ্গলরাজকে ফেরার সুযোগ আর কখনও দেবে না বিহার।
এনডিএ-র এই জয়ের পর স্পষ্ট—২০২৬-র বাংলা ভোটে বিজেপির নজর আরও তীক্ষ্ণ হতে চলেছে। আগামী কয়েক মাসে বাংলায় রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়বে বলেই রাজনৈতিক মহলের অনুমান।
FAQ
১) বিহার বিধানসভা নির্বাচনে কোন জোট জিতেছে?
এনডিএ (NDA) জোট এবারও বিহারে পরিষ্কার জয় পেয়েছে।
২) এই জয়ে বিজেপির রাজনৈতিক লাভ কী?
বিজেপি মনে করছে যে বিহারের জয় পরবর্তী রাজ্যগুলোর নির্বাচনে তাদের জন্য মনোবল ও গতি তৈরি করবে।
৩) মোদী কেন বাংলার প্রসঙ্গ তুললেন?
২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকে বিজেপি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে, তাই বিহারের জয়কে বাংলায় রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে ব্যবহার করছে।
৪) কোন কোন রাজ্যে আগামী বছর নির্বাচন?
পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি ও অসমে নির্বাচন হবে।
৫) বিজেপি কোন কোন রাজ্যে এখনও সরকার গড়েনি?
পশ্চিমবঙ্গ ও কেরলে এখনও ক্ষমতায় ফিরতে পারেনি বিজেপি।
৬) কংগ্রেসকে কেন ‘পরজীবী দল’ বললেন মোদী?
মোদীর দাবি, সাম্প্রতিক তিনটি নির্বাচনে কংগ্রেস খুব কম আসন পেয়েছে এবং অন্য দলগুলোর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
৭) এমএমসি বলতে কী বোঝাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী?
মোদী কংগ্রেসকে ব্যঙ্গ করে বলেছেন—এমএমসি মানে “মুসলিম লিগ–মাওবাদী কংগ্রেস”।
৮) রাহুল গান্ধীকে কী নিয়ে আক্রমণ করলেন মোদী?
তিনি অভিযোগ করেন, রাহুল বিহার নিয়ে ভুয়ো ধারণা ছড়িয়েছেন এবং ছট পুজোকে ‘নাটক’ বলেছেন।
৯) বিজেপি কেন বিহারকে ‘জঙ্গলরাজ’ থেকে মুক্তির প্রমাণ হিসেবে দেখাচ্ছে?
বিজেপির দাবি, বিহারের মানুষ তুষ্টিকরণ নয়, উন্নয়ন চাইছেন এবং জঙ্গলরাজকে আর ফিরতে দেবে না।
১০) এই ফলাফল বাংলার রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলতে পারে?
বিজেপির দাবি, বিহারের ফল তাদের কর্মীদের উৎসাহিত করেছে এবং ২০২৬-এর বাংলা নির্বাচনে গেরুয়া শিবির আরও আক্রমণাত্মক হবে।
#BiharElection2025 #BJP #WestBengal2026