বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তার সুর আরও ঘন হলেও ভারত ও চিনের বাণিজ্যিক সম্পর্কে দেখা গেল বিরল স্থিতিশীলতা। গত কয়েক মাস ধরে ভারতীয় পণ্যের চিনে রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। চলতি অর্থবর্ষের এপ্রিল থেকে অক্টোবর— প্রতিটি মাসেই রপ্তানি বৃদ্ধির রেখাটি ছিল ঊর্ধ্বমুখী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কবৃদ্ধির চাপের মধ্যে যখন দেশীয় এক্সপোর্টাররা উদ্বিগ্ন, ঠিক তখনই চিনের বাজারে বাড়তি প্রবেশাধিকার তাদের বড় স্বস্তি দিয়েছে।
অক্টোবরে রপ্তানিতে ৪২% বৃদ্ধির সুখবর
গত বছরের তুলনায় ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ভারতীয় রপ্তানির বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশে। এপ্রিল-অক্টোবর সময়ে মোট বৃদ্ধির হার ২৪.৭ শতাংশ। এই সাত মাসে ভারত থেকে চিনে গিয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩ কোটি ডলারের পণ্য। গ্লোবাল ডিম্যান্ডে ধাক্কা, বড় অর্থনীতিগুলিতে এক্সপোর্টে মন্দা— সবকিছুর মাঝেও এই স্থিতিশীল বাণিজ্য ভারতের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন সরকারি আধিকারিকেরা।
একজন সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন,
“গত কয়েক বছরের মধ্যে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সবচেয়ে স্থিতিশীল পর্যায় এখন। বিশেষ করে যখন বিশ্ব বাজারে অনিশ্চয়তা ক্রমেই বাড়ছে।”
পেট্রোলিয়াম, টেলিকম ও মেরিন পণ্যে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি
চিনে ভারতের যে সব পণ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে—
পেট্রোলিয়াম পণ্য
টেলিকম ইনস্ট্রুমেন্ট
মেরিন গুডস
বিশেষ করে পেট্রোলিয়াম পণ্যের রপ্তানি ছিল উল্লেখযোগ্য।
এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি: ১১%
জুলাই মাসে বৃদ্ধি: ২৮%
সেপ্টেম্বর মাসে বৃদ্ধি: ৩৩%
এই ধারাবাহিক বৃদ্ধির জেরে এপ্রিল–অক্টোবর সময়ে চিন ভারতীয় পণ্যের চতুর্থ বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে উঠে এসেছে।
আমদানিও বেড়েছে, তাই ট্রেড ডেফিসিট রয়ে গেল
শুধু রপ্তানি নয়, চিন থেকেও আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতে। এপ্রিল থেকে অক্টোবর— এই সময়ের মধ্যে মোট ৭,৩৯৯ কোটি ডলারের চিনা পণ্য এসেছে ভারতীয় বাজারে। ফলে ভারতীয় রপ্তানির বৃদ্ধির পরও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েই গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে এক্সপোর্টারদের মতে, রপ্তানি বৃদ্ধি একটি ইতিবাচক বার্তা হলেও আমদানি বৃদ্ধি কমানো এবং দেশীয় শিল্পকে শক্তিশালী করাই আগামী দিনের মূল চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন,
প্রিয়াঙ্কা-নিকের একঝাঁক উপহার, প্রথম মাসেই নীরকে ভরিয়ে দিলেন ‘মিমি মাসি’ ও ‘নিক মেসো’
