এদিন শুক্রবার ভারতীয় রেলের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটল। বিশ্বের উচ্চতম চেনাব রেলসেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি উদ্বোধন করার পরই এই সেতুর উপর দিয়ে ছুটে যায় বন্দেভারত ট্রেন। আর এই ট্রেন সফর যে এক অন্য অভিজ্ঞতার জন্ম দেবে তা স্পষ্ট। কারণ এত উচ্চতায় চারিদিককে নীচে ফেলে মেঘ ভেদ করে ছুটে যাবে বন্দে ভারত।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চেনাব রেলব্রিজ ছাড়াও উদ্বোধন করেন অঞ্জি ব্রিজ। ভারতের প্রথম ঝুলন্ত রেলসেতু এটি। এই রেলসেতুর মাধ্যমে বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের যোগাযোগ আরও সহজ হয়ে যাবে। দেশের বাকি অংশের সঙ্গে রেলসেতুর মাধ্যমে যুক্ত হল উপত্যকা। যেকোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে তা নিমেষেই মোকাবিলা করতে সক্ষম এই সেতু।
এর আগে এতদিন পর্যন্ত কাশ্মীর উপত্যকাকে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য ভরসা ছিল ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়ক। এত দীর্ঘ সড়কপথ পাড়ি দিয়ে কাশ্মীর উপত্যকায় পৌঁছোতে সময় লাগতো অনেকটাই বেশি। এবার এই চেনাব রেলসেতু সেই যাত্রাপথকে আরও সহজ করে দিল। এর ফলে আরও উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এছাড়া শীতের মরশুমে শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়কপথে বরফে ঢাকা থাকে। এর ফলে সড়কপথ বন্ধ করতে হয়। তবে সেসব বাধা আর পেতে হবে না নতুন তৈরি রেলসেতুতে। নির্বিঘ্নে নিজের গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে। এই রেলসেতুটি বিশ্বের সর্বোচ্চ আর্চ টাইপ রেলসেতু। এটির উচ্চতা ৩৫৯ মিটার ও দৈর্ঘ্য ১৩১৫ মিটার। রেলসেতুর আর্চস্প্যান ৪৬৭ মিটার।
চেনাব রেলসেতুটি জম্মু-কাশ্মীরের রিয়াসি জেলার কউরি এবং বক্কল এলাকাকে সংযোগ করেছে। অটল বিহারি বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই রেলসেতু তৈরির অনুমোদন দেন। এরপর ২০০৪ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। যদিও ২০০৯ সালে রেলসেতুটি তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসার পর রেলসেতুর কাজ শুরু হয় যা ২০২২ সালের আগস্ট মাসে শেষ হয়। এদিন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমন আবদুল্লাহ, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।