বলিউডের কিংবদন্তি তারকা ধর্মেন্দ্র। ‘হি-ম্যান’ নামে খ্যাত এই অভিনেতা ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে হিন্দি চলচ্চিত্রের পর্দা কাঁপিয়েছেন। প্রথম ছবির জন্য যিনি পেয়েছিলেন মাত্র ৫১ টাকা পারিশ্রমিক, তিনি ক্রমে গড়ে তুলেছিলেন ৪৫০–৫০০ কোটির বিশাল সাম্রাজ্য। অভিনয়, প্রযোজনা, ব্যবসা—সব মিলিয়েই এই বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এক প্রশ্ন—হেমা মালিনী কি সত্যিই কিছুই পাচ্ছেন না?
লোনাভলার ১২০ কোটির বিলাসবহুল ফার্মহাউস
ধর্মেন্দ্রর আয়ত্তে থাকা সবচেয়ে মূল্যবান সম্পত্তি লোনাভলার পাহাড়ি অঞ্চলে বিস্তৃত ১০০ একর ফার্মহাউস। সুইমিং পুল, থেরাপি জোন, বাগান, গেস্ট কটেজ—সব মিলিয়ে সম্পূর্ণ রিসর্টের মতো সেই ব্যাপক এলাকা।
প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌরের সঙ্গে জীবনের শেষ দিনগুলি এখানেই কাটিয়েছেন তিনি।
বর্তমানে এই ফার্মহাউসের বাজারমূল্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা। কথিত আছে, এখানেই তিনি ৩০টি কটেজের রিসর্ট তৈরি করার নতুন পরিকল্পনা করছিলেন।
রেস্তরাঁ ব্যবসায় ধর্মেন্দ্র—‘হি ম্যান’ ছিল প্যাশন প্রজেক্ট
২০২২ সালে হরিয়ানার কার্নল হাইওয়ের ধারে তিনি চালু করেন ‘He-Man Restaurant’।
খোলার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটি ট্যুরিস্টদের প্রথম পছন্দ হয়ে ওঠে।
পরিবারের ঘনিষ্ঠরা বলেন, এই রেস্তরাঁ ছিল ধর্মেন্দ্রর একান্ত ভালোবাসার প্রজেক্ট—প্যাশন, লাভ নয়।
স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে আরও কোটি কোটি সম্পত্তি
মহারাষ্ট্রে ছড়িয়ে থাকা ১৭ কোটি টাকার বাড়ি-জমি
কৃষিজমি ও কৃষি-অযোগ্য জমি মিলিয়ে ১.৪ কোটি টাকা
বিলাসবহুল গাড়ির সংগ্রহ—মার্সিডিজ-বেঞ্জ S-Class, SL500, রেঞ্জ রোভার
তবে সবচেয়ে ‘মনসই’ গাড়ি ছিল ১৯৬০ সালে কেনা ৬৫ বছরের পুরনো ফিয়াট—তাঁর অভিনয়জীবনের প্রথম বছরের স্মৃতি।
আরও পড়ুন,

তাহলে হেমা মালিনী কেন কিছুই পাবেন না?
ইন্ডাস্ট্রি মহলের বড় অংশের দাবি—আইনগত কারণেই হেমা মালিনী ধর্মেন্দ্রর সম্পত্তিতে অধিকার পাবেন না।
কারণ:
ধর্মেন্দ্র প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌরকে ডিভোর্স না দিয়েই হেমার সঙ্গে বৈবাহিক জীবনে আবদ্ধ হন।
হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রথম বিয়ে বহাল থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে আইনসম্মত নয়—ফলে সেই সঙ্গীর উপর উইফ রাইট প্রযোজ্য হয় না।
এই যুক্তিতে হেমা মালিনী সরাসরি তাঁর স্বামীর সম্পত্তির কোনও অংশ নাও পেতে পারেন।
আরও পড়ুন,

তবে এষা-অহনার অধিকার অটুট
আইন অনুযায়ী সন্তানদের পরিচয় সব ক্ষেত্রে পরিষ্কার।
ধর্মেন্দ্রর দ্বিতীয় পক্ষের দুই কন্যা—এষা দিওল ও অহনা দিওল—
বাবার সম্পত্তির সমান উত্তরাধিকার পাওয়ার অধিকারী।
তাঁদের ক্ষেত্রেই রাখি বা বিয়ের বৈধতা কোনও বাধা নয়।
ধর্মেন্দ্রর জীবন ও সম্পত্তিবিষয়ক বিতর্ক যেমন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, তেমনি আবার স্মরণ করিয়ে দেয়—একজন অভিনেতার সাফল্যের পেছনে লুকিয়ে থাকে কত দীর্ঘ সংগ্রাম। মাত্র ৫১ টাকা দিয়ে শুরু হওয়া সেই পথযাত্রা শেষ হয়েছে কয়েকশো কোটির সম্পদে। আর তাঁর ব্যক্তিজীবনের জটিলতা রয়ে গেছে মৃত্যুর পরেও।
আরও পড়ুন,

